কাশ্মিরে শিশুদের ওপর সহিংসতা বন্ধের আহ্বান জাতিসংঘের
ভারতশাসিত কাশ্মিরে শিশুদের বিরুদ্ধে ‘ব্যাপক সহিংসতা’ নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তেনিও গুতেরেস। একইসঙ্গে কাশ্মিরি শিশুদের রক্ষায় পেলেট গান ব্যবহার বন্ধ করতে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নরেন্দ্র মোদির সরকারকে আহ্বানও জানিয়েছেন তিনি।
‘চিলড্রেন অ্যান্ড আর্মড কনফ্লিক্ট’ বিষয়ে সম্প্রতি প্রকাশিত একটি বার্ষিক রিপোর্টে জাতিসংঘ মহাসচিব ভারতের প্রতি এই আহ্বান জানান। রিপোর্টটি গত সপ্তাহে আন্তেনিও গুতেরেসের বিশেষ দূত ভার্জিনিয়া গ্যাম্বা প্রকাশ করেন।
বিজ্ঞাপন
রিপোর্টে জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, ‘ভারতশাসিত জম্মু ও কাশ্মিরে শিশুদের বিরুদ্ধে চলমান ব্যাপক সহিংসতা নিয়ে আমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। তাই শিশুদের বিরুদ্ধে পেলেট গান ব্যবহার বন্ধ করাসহ অল্পবয়সীদের রক্ষায় যথাযথ ব্যবস্থা নিতে আমি দেশটির সরকারের কাছে আহ্বান জানাচ্ছি।’
এছাড়া শিশুদেরকে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সম্পৃক্ত না করা, নিরাপদ স্কুল ঘোষণাপত্র সত্যায়ন করা এবং সর্বোপরি ভ্যাঙ্কুভার প্রিন্সিপাল বাস্তবায়ন করতেও নয়াদিল্লির প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এদিকে চার মাস ধরে কাশ্মিরের সাতটি স্কুল সামরিক কাজে ভারতের নিরাপত্তা বাহিনী ব্যবহার করেছে উল্লেখ করে আন্তেনিও গুতেরেস আরও বলেন, ‘কাশ্মিরে শিশুদের বিরুদ্ধে গ্রেফতার অভিযান ও নির্যাতনের ঘটনায় আমি আতঙ্কিত। এছাড়া সামরিক বাহিনী উপত্যকাটির স্কুলগুলো ব্যবহার করায় আমি খুবই উদ্বিগ্ন।’
মহাসচিব বলেন, ‘আটককৃত শিশুদের যতটা সম্ভব অল্প সময়ের মধ্যে কারাগার থেকে মুক্তি ও কারাগারে তাদের ওপর যেকোনো ধরনের নির্যাতন বন্ধের বিষয়টি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
জাতিসংঘের ওই রিপোর্ট অনুযায়ী, কাশ্মিরে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে মোট ৩৯ জন শিশু হতাহত হয়েছে। তাদের মধ্যে ৩৩ জন ছেলে ও ৬ জন মেয়ে শিশু। ভুক্তভোগী সেসব শিুদের মধ্যে ৯ জন নিহত এবং বাকি ৩০ জন পেলেট গানের গুলিতে বিকলাঙ্গ হয়েছে।
সোমবার ‘যুদ্ধ ও সহিংসতার মধ্যে শিশুরা’ শিরোনামে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অনুষ্ঠিত এক উন্মুক্ত আলোচনা সভায় আন্তেনিও গুতেরেস বলেন, যুদ্ধ ও সহিংসতার সময় শিশুদের অধিকারের বিষয়ে উদাসীনতা খুবই দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক। আলোচনা সভাটি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত হয়।
এসময় শিশুদের অধিকার রক্ষার বিষয়ে অগ্রাধিকার দিতে যুদ্ধরত পক্ষগুলোর প্রাত আহ্বান জানিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘যুদ্ধ ও সহিংসতায় শিশুদের কোনো স্থান নেই। শিশুদের অধিকার পদদলিত করে আমরা কোনো যুদ্ধ চাই না।’
টিএম