আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন সরকারের সর্বশেষ নিয়ন্ত্রিত তেল-গ্যাস সমৃদ্ধ মারিব অঞ্চলের যুদ্ধরত পক্ষগুলোর মধ্যে তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। শনিবার ভোরের দিকে এই লড়াই আরও জোরাল হয়েছে বলে সেখানকার তিনটি সূত্রের বরাত দিয়ে জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স। 

যুদ্ধ-বিধ্বস্ত ইয়েমেনের বিভিন্ন পক্ষকে একটি শান্তি চুক্তিতে পৌঁছাতে যুক্তরাষ্ট্র এবং জাতিসংঘ যখন জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে তখন মারিবে এই লড়াই ছড়িয়ে পড়েছে। ছয় বছরের বেশি সময় ধরে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোটের বিরুদ্ধে লড়াইরত ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা মারিব অঞ্চলের নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া হয়ে হামলা চালাচ্ছে। হুথিদের এই হামলাকে শান্তি প্রচেষ্টা বাস্তবায়নের পথে ‌গুরুতর হমকি বলে অভিহিত করেছে ওয়াশিংটন।

ইয়েমেনের লড়াইরত গোষ্ঠীগুলোকে শান্তি প্রক্রিয়ার আলোচনায় আনতে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বৃদ্ধি পাওয়ায় সংঘর্ষ কিছুটা কমেছিল। কিন্তু ইয়েমেনের সরকারপন্থী তিনটি সূত্র বলেছে, হুথি বিদ্রোহীদের নতুন হামলার পর সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এই সংঘর্ষের পর হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে বিমান হামলা বৃদ্ধি করেছে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট।

হুথি-পরিচালিত আল-মাশিরাহ টেলিভিশন বলছে, শনিবার ভোরের দিকে সৌদি জোটের যুদ্ধবিমান অন্তত ১৩ বার হামলা চালিয়েছে। স্থানীয় এক কর্মকর্তা বলেছেন, রোববার সকাল পর্যন্তও মারিবে এই সংঘর্ষ অব্যাহত ছিল। গত সপ্তাহের তুলনায় রোববার অত্যন্ত তীব্র সংঘর্ষ হয়েছে।

যুদ্ধবিধ্বস্ত ইয়েমেনের মারিবে অভ্যন্তরীণ বাস্ত্যুচুত প্রায় ১০ লাখ মানুষ রয়েছে। এই মানুষরাই নতুন সংঘাতের কেন্দ্রে চলে এসেছেন।

২০১৫ সালের শুরুর দিকে হুথি বিদ্রোহীদের হামলার মুখে সৌদি-সমর্থিত ইয়েমেনের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট আব্দ রাব্বু মনসুর আল হাদি ক্ষমতা ছেড়ে সৌদি আরবে পালিয়ে যান। ক্ষমতাচ্যুত এই প্রেসিডেন্টকে ফেরাতে সৌদি নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ইয়েমেনে হুথিদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে।

যদিও ইয়েমেনের এই সংঘাতকে মধ্যপ্রাচ্যে আধিপত্যের লড়াইয়ে সৌদি-ইরানের ছায়াযুদ্ধ হিসেবে দেখা হয়। মধ্যপ্রাচ্যের এই যুদ্ধে ইয়েমেনের লাখ লাখ মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে এবং বাস্ত্যুচুত হয়েছেন লাখো মানুষ। চলমান এই সংঘাতে ইয়েমেন চরম দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে বলে সতর্ক করে দিয়েছে জাতিসংঘ।

সৌদি জোটের হামলার জবাবে ইয়েমেনের হুথিরা প্রায়ই সৌদি আরবের বিভিন্ন শহরে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে।

এসএস