বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলো জানুয়ারির শেষ থেকে ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি সময়ের মধ্যে করোনা ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ গ্রহণের আশা করতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) এ কথা জানায়। খবর এএফপি’র।

যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো ও কানাডাসহ বিশ্বের কয়েকটি ধনী দেশে ইতোমধ্যেই টিকা দেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে।

ডাব্লিউএইচও’র ভ্যাকসিন বিষয়ক প্রধান কেইট ও’ব্রিয়েন জানান, বিশ্বব্যাপী ভ্যাকসিন সংগ্রহ ও বিতরণ প্রচেষ্টায় নিয়োজিত কোভাক্স দুই বিলিয়ন ডোজ টিকার জন্য চুক্তি করেছে ও কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই প্রথম চালান হাতে আসবে।

কোভাক্সের লক্ষ্য এই প্রকল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ৯২ নিম্ন ও নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশের ২০ শতাংশ লোকের জন্য বছরের শেষ পর্যন্ত ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হবে।

সামাজিক গণমাধ্যমে সরাসরি প্রচারিত অনুষ্ঠানে ও’ব্রিয়েন জানান, এই প্রকল্পে দুই বিলিয়ন ডোজেরও বেশি ভ্যাকসিন সংগ্রহ করা হবে।

তিনি বলেন, আমরা সম্ভবত জানুয়ারির শেষের দিকে আর যদি তা না হয়, তবে অবশ্যই ফেব্রুয়ারির শুরুতে বা মাঝামাঝি সময়ে ভ্যাকসিন সরবরাহ শুরু করব।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা, জিএভিআই ও কোয়ালিশন ফর এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশনসের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত ‘কোভ্যাক্স’ কর্মসূচির লক্ষ্য হলো- কোনো দেশ যেন করোনা ভ্যাকসিন মজুদ করে না রাখে ও প্রতিটি দেশের সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা মানুষগুলোকে যেন প্রথম ভ্যাকসিন সেবা দেওয়া যায়।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশের ১৩ কোটি ৭৬ লাখ মানুষকে করোনা টিকার আওতায় আনা হবে। পর্যায়ক্রমে ডাবল ডোজ ভ্যাকসিন দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। কোভাক্স এর আওতায় ১৬ কোটি ৪০ লাখ জনসংখ্যার মধ্যে ৩ কোটি ৪৪ লাখ মানুষকে ভ্যাকসিন দেওয়া হবে।

এছাড়াও করোনাভাইরাসের টিকা আমদানিতে ৪ হাজার ২৩৬ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। করোনা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য সরঞ্জাম কিনতে আরও ১ হাজার ৮৭৭ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 

দেশে জরুরি ব্যবহারের জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়-অ্যাস্ট্রাজেনেকা উদ্ভাবিত করোনাভাইরাস ভ্যাকসিন অনুমোদন দেওয়ার পরই এই প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার (এসআইআই) তৈরি এই ভ্যাকসিনের তিন কোটি ডোজ ক্রয়ের জন্য ৫০৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা অগ্রিম প্রদান করেছে।

এখন পর্যন্ত মোট নয় কোটি আশি লাখ ডোজ ভ্যাকসিন ক্রয়ের জন্য চুক্তি করেছে বাংলাদেশ। এর মধ্যে কোভ্যাক্স থেকে আসবে ছয় কোটি ৮০ লাখ ডোজ এবং এসআইআই থেকে আসবে তিন কোটি ডোজ। দেশের চার কোটি ৯০ লাখ মানুষের মধ্যে এই ভ্যাকসিন বিতরণ করা হবে।

এদিকে করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে সুরক্ষায় অনেক ধনী দেশ ইতোমধ্যে নাগরিকদের ভ্যাকসিন প্রয়োগ শুরু করেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) বলেছে, করোনাভাইরাস সংক্রমণের দ্বিতীয়, তৃতীয় ঢেউয়ে বিশ্ব যখন ধুঁকছে; তখন অন্তত ৬০টি ভ্যাকসিন পরীক্ষার বিভিন্ন ধাপে রয়েছে। এরমধ্যে ব্রিটেনের অ্যাস্ট্রাজেনেকা-অক্সফোর্ড, মার্কিন ফাইজার ও জার্মানির বায়োএনটেক, মার্কিন মডার্না, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ ও চীনের সিনোফার্মের ভ্যাকসিনও রয়েছে।

ওএফ