করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় নেপালকে সিনোফার্মের টিকা দিচ্ছে চীন। তবে সেই টিকার দাম প্রকাশ করায় কাঠমাণ্ডুর ওপর বেজায় খেপেছে দেশটি। রোববার (২০ জুন) এক প্রতিবেদনে একথা জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ ও হিন্দুস্তান টাইমস। এর আগে টিকার দাম প্রকাশ করায় বাংলাদেশের ওপরও অসন্তুষ্ট হয়েছিল বেইজিং।

সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, বেশ কয়েকটি নেপালি সংবাদমাধ্যম চীনা টিকা সিনোফার্মের ক্রয়মূল্য সামনে এনেছে। চীনা ওই টিকার প্রতি ডোজের দাম ১০ ডলার বলে জানানো হয়েছে। অর্থাৎ বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রতি ডোজ টিকার দাম পড়েছে প্রায় ৮৫০ টাকা। এই দামেই নেপাল টিকা কেনার পরিকল্পনা করলেও মূল্য প্রকাশ্যে আসায় অসন্তুষ্ট বিক্রেতা দেশটি।

করোনা মহামারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলাতে নেপালের ক্ষমতাসীন কে পি শর্মা ওলি সরকার চীন থেকে ৪০ লাখ ডোজ কোভিড-১৯ টিকা কেনার চুক্তি করে। এক্ষেত্রে টিকা উৎপাদনকারী সংস্থা সিনোফার্মের শর্ত ছিল- এই টিকার ক্রয়মূল্য ও সরবরাহ সংক্রান্ত সকল তথ্য গোপন রাখবে নেপাল। কিন্তু নেপালেরই বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে টিকার মূল্য প্রকাশ হয়ে যায়।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জি নিউজ জানিয়েছে, শর্ত অনুযায়ী নেপাল করোনা টিকার দাম গোপন রাখতে ব্যর্থ হওয়ায় হিমালয়ের কোলে অবস্থিত এই দেশটির কয়েকটি সংস্থার বিরুদ্ধে অসন্তোষ প্রকাশ করে সিনোফার্ম। এছাড়া দাম প্রকাশ হয়ে যাওয়ার পেছনে নেপালের সরকারের দোষই দেখছে বেইজিংয়ের নীতিনির্ধারকরা। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে ইতোমধ্যেই এ ব্যাপারে সতর্ক করেছে কাঠমাণ্ডুর চীনা দূতাবাস।

এরপরই চীনের মনোভাব বুঝতে পেরে অতিদ্রুততার সঙ্গে একটি বিবৃতি দেয় নেপালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। ইংরেজিতে দেওয়া ওই বিবৃতিতে টিকার মূল্য নিয়ে দেশটির সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যকে ভুল বলে দাবি করা হয়।

বিবৃতিতে বলা হয়, ‘চীনের কাছ থেকে করোনা টিকা কেনা নিয়ে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সকল রিপোর্ট ভিত্তিহীন। ভ্যাকসিন কেনা নিয়ে চীনের সঙ্গে এখনও আলোচনা চলছে এবং সেখানে কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি।’

নেপালের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. কৃষ্ণপ্রসাদ পাউদেল দেশটির সংবাদমাধ্যম কাঠমাণ্ডু পোস্ট’কে জানিয়েছেন, ‘টিকার দাম ও অন্যান্য বিষয় যেভাবে গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে তা উদ্বেগজনক। কারণ এগুলো খুবই স্পর্শকাতর ইস্যু।’

তিনি আরও বলেন, ‘টিকা নিয়ে চীনের সঙ্গে কোনো ধরনের চুক্তিতে পৌঁছানোর আগেই বিষয়টিতে একটু বেশিই আগ্রহ দেখিয়েছে গণমাধ্যমগুলো। এ বিষয়ে আমরা চিন্তিত। আর এখন এই পরিস্থিতিতে চীনের কাছ থেকে আমরা আসলেই টিকা পাবো কি না, সে বিষয়েও চিন্তিত আমরা।’

টিএম