করোনাভাইরাসের নতুন ধরন ল্যাম্বডা, উদ্বেগে ডব্লিউএইচও
অভিযোজন প্রক্রিয়ার ধারাবাহিকতায় করোনাভাইরাসের আর একটি ধরন শনাক্ত হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকায়। গ্রীক বর্ণমালা অনুসারে নতুন এই ধরনটির নাম রাখা হয়েছে ‘ল্যাম্বডা’। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ইতোমধ্যে এই ধরনটির বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়েছে।
শনিবার এক প্রতিবেদনে ডব্লিউএইচওর বরাত দিয়ে চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংবাদ সংস্থা সিনহুয়া নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, গত বছর আগস্টে দক্ষিণ আমেরিকার দেশ পেরুতে সর্বপ্রথম ল্যাম্বডায় আক্রান্ত রোগীর সন্ধান পাওয়া গিয়েছিল। বর্তমানে সেখানে আক্রান্ত করোনা রোগীদের প্রায় ৮১ শতাংশ এই ধরনে আক্রান্ত।
বিজ্ঞাপন
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, চলতি বছর এপ্রিল থেকে পেরুতে ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করেছে ল্যাম্বডায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। একই সময়ে পেরুর প্রতিবেশী দেশ চিলিতেও এর উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। বর্তমানে চিলিতে মোট আক্রান্ত করোনা রোগীর ৩২ শতাংশ ল্যাম্বডায় আক্রান্ত।
ইতোমধ্যে ইকুয়েডর, আর্জেন্টিনা সহ দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলের ২৯ টি দেশে করোনাভাইরাসের এই ধরন শনাক্ত হয়েছে। শনিবার ল্যাম্বডাকে `বিপজ্জনক ধরন’ (ভ্যারিয়েন্ট অব ইন্টারেস্ট) হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে ডব্লিউএইচও।
এ বিষয়ক এক বিবৃতিতে সংস্থার পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘এখনই একে ‘গ্লোবাল ভ্যারিয়্যান্ট অব কনসার্ন’ বা বিশ্বব্যাপী উদ্বেগজনক ধরনের তালিকাভুক্ত না করা হলেও যেভাবে এটি দক্ষিণ আমেরিকায় ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে অদূর ভবিষ্যতে এই ধরনটি উদ্বেগজনক হবে না- এমন আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়ার সুযোগ নেই।’
‘সাম্প্রতিক পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এই ধরনটির সংক্রমণ ক্ষমতা বেড়ে চলেছে দ্রুত। অ্যান্টিবডিকে নষ্ট করে দিচ্ছে এই ল্যাম্বডা; আর এ কারণেই এই ধরনটিকে নিয়ে উদ্বেগে আছে ডব্লিউএইচও।’
গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মানুষসহ বিভিন্ন পশুপাখির মধ্যে সংক্রমিত হওয়ার ফলে ক্রমাগত অভিযোজন বা মিউটেশনের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে সার্স-কোভ-২ বা করোনাভাইরাস। পরিবেশ পরিস্থিতি ও আক্রান্তের শারিরীক অবস্থার সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায় মূল ভাইরাসটির পাশাপাশি এর কয়েকটি পরিবর্তিত/ অভিযোজিত প্রজাতিরও আগমন ঘটেছে পৃথিবীতে, যেগুলোকে বিজ্ঞানের ভাষায় ভ্যারিয়েন্ট বা ধরন বলে উল্লেখ করা হয়।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে এর আগে মূল করোনাভাইরাসের ৪ টি প্রধান ভ্যারিয়েন্ট শনাক্ত হয়েছিল। এগুলো হলো- ব্রিটেন ধরন, ব্রাজিলীয় ধরন, দক্ষিণ আফ্রিকা ধরন ও ভারতীয় ধরন।
ডব্লিউএইচও এই ধরনগুলোন নামকরণ করেছে গ্রীক বর্ণমালার ক্রমানুসারে। সেই অনুযায়ী, ব্রিটেন ধরনের নাম আলফা, ব্রাজিলীয় ধরনের নাম বেটা, দক্ষিণ আফ্রিকা ধরনের নাম গ্যামা ও ভারতীয় ধরনের নাম ডেল্টা দেওয়া হয়েছে। এখন এই তালিকার নতুন সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্তি ঘটল ল্যাম্বডার।
এই মুহূর্তে গোটা বিশ্বে আতঙ্ক হিসেবে হাজির হয়েছে ভারতে সন্ধান মেলা করোনা স্ট্রেন B.1.617.2 তথা ‘ডেল্টা’। গত মাস পর্যন্ত একেও ‘ভ্যারিয়্যান্ট অফ ইন্টারেস্ট’ বা বিপজ্জনক ধরনের তালিকাতেই রাখা হয়েছিল; কিন্তু বর্তমানে এটি গ্লোবার ভ্যারিয়েন্ট অব কনসার্ন বা উদ্বেগজনক ধরনে উন্নীত হয়েছে। ১৫ জুন পর্যন্ত বিশ্বের ৮০টি দেশে সন্ধান মিলেছে ডেল্টা ধরনের।
সূত্র: হিন্দুস্তান টাইমস
এসএমডব্লিউ