করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় টিকা পেতে ইসরায়েলের সঙ্গে স্বাক্ষর করা একটি চুক্তি বাতিল করেছে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। শুক্রবার (১৮ জুন) এই ঘোষণা দেয় দেশটি। ফিলিস্তিন বলছে, ইসরায়েলের দিতে চাওয়া ফাইজারের করোনা টিকাগুলোর মেয়াদ খুব শিগগিরই শেষ হয়ে যাবে। যার কারণে এসব টিকা গ্রহণ করবে না তারা।

শুক্রবার এক প্রতিবেদনে ফরাসি বার্তাসংস্থা এএফপি জানায়, শুক্রবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এবং দেশটির প্রতিরক্ষা ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় থেকে একটি যৌথ বিবৃতি দেওয়া হয়।

বিবৃতিতে দেশটির নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট বলেছেন, ‘ফিলিস্তিনের ক্ষমতাসীন সরকারের সঙ্গে সম্প্রতি একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে ইসরায়েল। সেই অনুযায়ী দেশটিকে ফাইজার-বায়োএনটেকের করোনা টিকার ১০ লাখ ডোজ দেওয়া হবে। তবে খুব দ্রুত ব্যবহার করতে হবে ডোজগুলো, কারণ আর কিছুদিন পরেই এগুলো মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে পড়বে।’

এদিকে এমন অস্বাভাবিক চুক্তির তথ্য সামনে আসার পরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বিভিন্ন প্লাটফর্মে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়ে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ। সেখানে অনেকে এমনও অভিযোগ করেন যে- ইসরায়েলের কাছ থেকে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ মানহীন ভ্যাকসিন নিচ্ছে। আবার এসব ভ্যাকসিন করোনা মোকাবিলায় কার্যকর নাও হতে পারে বলে অনেকে আশঙ্কা করেন।

এরপরই ইসরায়েলের সঙ্গে করোনা টিকা বিনিময়ের চুক্তি বাতিল করে ফিলিস্তিন। শুক্রবার রাতে ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্যমন্ত্রী মাই আল-কাইলার সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে দেশটির মাহমুদ আব্বাস সরকারের মুখপাত্র ইব্রাহিম মেলহেম বলেন, ‘আজ সন্ধ্যায় ইসরায়েলের কাছ থেকে ৯০ হাজার ডোজ করোনা টিকা হাতে পেয়েছি আমরা। পরে আমাদের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরীক্ষায় দেখা যায়- চুক্তি অনুযায়ী যথাযথ মান নিশ্চিত করে সেসব টিকা আমাদেরকে দেওয়া হয়নি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এরপরই ইসরায়েলের সঙ্গে এই চুক্তি বাতিল করতে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ স্তায়েহ। একই সঙ্গে সন্ধ্যায় ইসরায়েলের পাঠানো সকল টিকাও ফেরত দেওয়ার নির্দেশ দেন তিনি।’

বিশ্বে করোনার টিকাদানে সবচেয়ে এগিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে ইসরায়েল অন্যতম। ইসরায়েলের ৫০ লাখ ১০ হাজার মানুষ, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৫৫ শতাংশ, করোনা টিকার দুই ডোজই নিয়েছেন। বাকিদের প্রথম ডোজ নেওয়া হয়ে গিয়েছে।

অন্যদিকে ফিলিস্তিনের দুই অংশ- গাজা ভূখণ্ড ও পশ্চিমতীরে করোনা টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন ২ লাখ ৬০ হাজার মানুষ। এছাড়া গত মে মাসে শেষ হওয়া ১১ দিনের যুদ্ধের পর চরম বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে গাজা ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ব্যবস্থা।

সূত্র: আলজাজিরা

টিএম