গত বছরের তুলনায় চলতি ব‌‌ছরে বৈশ্বিক শান্তি সূচকে ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌(জিপিআই) বাং‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌লাদেশে‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌র‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌ সাত ধাপ উন্নতি হ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌য়েছে। অস্ট্রেলিয়ার সিডনিভিত্তিক আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের (আইইপি) তৈরি বিশ্ব শান্তির সূচকে গত বছর ৯৭তম অবস্থানে থাকলেও চলতি বছরে ২ দশমিক ০৬৮ স্কোর নিয়ে বাংলাদেশ ৯১তম স্থানে উঠে এসেছে।

বৃহস্পতিবার অস্ট্রেলিয়ার এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান বৈশ্বিক শান্তি সূচক-২০২১ প্রকাশ করেছে। সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে শান্তিতে বাংলাদেশের অবস্থান তৃতীয়।

প্রত্যেক বছর বিশ্বের স্বাধীন ১৬৩টি দেশ ও ভূখণ্ডের নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ জীবন-যাপনের নিরাপত্তা, সুরক্ষা, অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে নেয়া পদক্ষেপের ওপর ভিত্তি করে এই তালিকা তৈরি করে আইইপি। চলতি বছর সহিংসতার অনুপস্থিতি অথবা সহিংসতার ভয়কে ধরে তিনটি মানদণ্ড— সুরক্ষা এবং নিরাপত্তা, চলমান সংঘাত এবং সামরিকায়নের ওপর ভিত্তি করে এই সূচক তৈরি করেছে আইইপি।

শান্তির এই সূচকে গত বছরের তুলনায় একবারে সাত লাফ দেওয়ায় শ্রীলঙ্কাকে পেছনে ফেলেছে বাংলাদেশ। শ্রীলঙ্কায় শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতির ব্যাপক অবনতি ঘটায় এর প্রভাব পড়েছে সূচকেও। গত বছরের তুলনায় ১৯ ধাপ অবনতি ঘটেছে দেশটির; এবারের সূচকে তাদের বৈশ্বিক অবস্থান ৯৫তম। তবে দক্ষিণ এশিয়ায় চতুর্থ স্থানে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। 

অন্যদিকে, গত বছরের তুলনায় দুই ধাপ উন্নতি ঘটেছে ভারতের। এ বছর বৈশ্বিক শান্তি সূচকে দেশটির অবস্থান ১৩৫তম এবং দক্ষিণ এশিয়ায় পঞ্চম। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে পাকিস্তানে। গত বছরের তুলনায় দুই ধাপ অবনতি ঘটেছে দেশটির। এর ফলে ১৫০তম অবস্থানে নেমেছে পাকিস্তান। দক্ষিণ এশিয়ায় পাকিস্তানের অবস্থান ষষ্ঠ।

টানা চতুর্থবারের মতো বিশ্বের শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় একেবারে তলানিতে রয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান (১৬৩তম)। দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় সবার ওপরে আছে ভুটান। এরপরই আছে নেপাল। তবে দেশ দুটির বৈশ্বিক সূচকে অবস্থান যথাক্রমে ২২তম এবং ৮৫তম।

ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের এ সূচকে বলা হয়েছে, এই অঞ্চলে বাংলাদেশ এবং ভারতে সহিংসতার ভয়ের হার নিম্ন রয়েছে। তারপরও বাংলাদেশের ২৫ শতাংশ এবং ভারতের ২৩ শতাংশ মানুষ সহিংস অপরাধের ব্যাপারে খুবই উদ্বিগ্ন। এছাড়া এই অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে সহিংসতার সর্বাধিক ভয় রয়েছে আফগানিস্তানে। দেশটির ৫৩ শতাংশ মানুষ সহিংসতার ব্যাপারে অত্যন্ত উদ্বিগ্ন।

সিডনিভিত্তিক আন্তর্জাতিক এই গবেষণা প্রতিষ্ঠান বলছে, গত বছর বৈশ্বিক শান্তি সূচকে বাংলাদেশের স্কোর ২ দশমিক ১০২ থাকলেও চলতি বছরে তা ২ দশমিক ০৬৮। একই সঙ্গে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে ১ দশমিক ৬২ শতাংশ বেশি শান্তিপূর্ণ রয়েছে বাংলাদেশ।

২০২১ সালের এই সূচকে দেখা গেছে, বৈশ্বিক শান্তি গড়ে ০ দশমিক ০৭ শতাংশ অবনতি ঘটেছে। স্বল্প পরিমাণে হলেও গত ১৩ বছরের মধ্যে ৯ম বারের মতো বৈশ্বিক শান্তির অবনতি ঘটেছে বলে আইইপির প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। 

বৈশ্বিক শান্তির এই সূচকে মধ্যপ্রাচ্য এবং উত্তর আফ্রিকা অঞ্চল সবচেয়ে কম শান্তিপূর্ণ অঞ্চল রয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে কম শান্তিপূর্ণ প্রতি পাঁচটি দেশের মধ্যে অন্তত তিনটির অবস্থান এই দুই অঞ্চলে। 

বরাবরের মতো বিশ্বের শান্তিপূর্ণ অঞ্চলের খেতাব চলে গেছে ইউরোপে। বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ প্রত্যেক ১০টি দেশের অন্তত আটটির অবস্থান ওই অঞ্চলে।

ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিকস অ্যান্ড পিসের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ শীর্ষ অর্ধেক দেশের তালিকায় ইউরোপের বাইরের কোনো দেশই ঠাঁই পায়নি। আইইপির এই সূচক প্রথমবার প্রকাশের সময় থেকে বরাবরের মতো বিশ্বের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশের তালিকায় শীর্ষে আছে আইসল্যান্ড (১ম)। এরপরই আছে নিউজিল্যান্ড (২য়), ডেনমার্ক (৩য়), পর্তুগাল (৪র্থ) ও স্লোভেনিয়া (৫ম)।

এসএস