মাস্ক-সামাজিক দূরত্ব উধাও উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে
করোনা মহামারিতে কাঁপছে বিশ্ব, সংক্রমণে নিয়ন্ত্রণ আনতে দেশে দেশে জারি হচ্ছে লকডাউন ও কঠোর স্বাস্থ্যবিধি; কিন্তু যে স্থান থেকে এই মহামারির উৎপত্তি, সেই উহান শহরের বাসিন্দাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়ে কোনো আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।
সম্প্রতি স্নাতক পাস করা শিক্ষার্থীদের সনদ প্রদানে সমাবর্তন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল উহান বিশ্ববিদ্যালয়। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে উপস্থিত হয়েছিলেন ১১ হাজার শিক্ষার্থী।
বিজ্ঞাপন
কিন্তু কারো মুখেই ছিল না মাস্ক। গোটা অনুষ্ঠানে কোনো প্রকার সামাজিক দূরত্বও মানা হয়নি। ফ্রান্সের বার্তাসংস্থা এএফপি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
গত বছর চীনের গুয়াংডং প্রদেশের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হয় সার্স-কোভ-২ ভাইরাস যা পরবর্তীতে সাধারণভাবে স্বীকৃতি পায় নভেল করোনাভাইরাস নামে। করোনায় প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটিও ঘটেছিল সেখানে।
উহানে প্রথম যে ব্যক্তি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যান, সে সময় চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছিল ‘অপরিচিত ধরনের নিউমোনিয়ায়’ আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন ওই ব্যক্তি। পরে অবশ্য দেশটির স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছিল- বাদুড়, প্যাঙ্গোলিন বা অন্য কোনো বন্যপ্রাণীর মাধ্যমে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন ওই ব্যক্তি।
চীনের বন্যপ্রাণীর মাংস বেশ জনপ্রিয়। উহান শহরের সিফুড মার্কেটে নিয়মিত বন্যপ্রাণী ও সেগুলোর মাংস কেনা-বেচা করা হতো। দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, করোনায় প্রথম মৃত ওই ব্যক্তি নিয়মিত সিফুড মার্কেটে যাতায়াত করতেন। সেই থেকে বন্ধ আছে ওই মার্কেট।
করোনা সংক্রমণ দেখা দেওয়ার পরপরই অবশ্য ত্বরিৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে চীনের সরকার। মাসের পর মাস লকডাউনে ছিল উহান এবং এর সুফলও পাওয়া গেছে। করোনা সংক্রমণ এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে গুয়াংডং প্রাদেশিক সরকার। চীনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার গুয়াংডংয়ে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন মাত্র ২০ জন।
মহামারির কারণে একান্ত জরুরি সেবা ছাড়া গত এক বছরেরও বেশি সময় প্রায় সবকিছুই বন্ধ ছিল উহানে। ২০২০ সালের পুরোটাই শিক্ষা কার্যক্রম অনলাইনে চলেছে সেখানে। ফলে, গত বছর যেসব শিক্ষার্থী স্নাতক পাস করেছিলেন কিন্তু সনদ পাননি, তারাও যোগ দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন অনুষ্ঠানে।
সমাবর্তনের ব্যানারে শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানানোর পাশাপাশি উল্লেখ করা ছিল একটি চীনা কবিতার পংক্তি- ‘এই বিশ্ব এক মহাসমুদ্র আর আমরা সবাই হচ্ছি সেই সমুদ্রে সন্তরণরত মাছ।’
সূত্র: এএফপি
এসএমডব্লিউ