নেতানিয়াহু গেছেন, এটিই বড় সুখবর: ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর আমলে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সবচেয়ে খারাপ সময় পর করেছে মন্তব্য করে ফিলিস্তিনের প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ স্তায়েহ বলেছেন, ইসরায়েলে নেতানিয়াহুর আমল শেষ হয়েছে এটিই ফিলিস্তিনের জন্য সবচেয়ে বড় আনন্দের সংবাদ।
তবে নতুন যে সরকার এখন ক্ষমতায় আসীন হয়েছে, সেটি নেতানিয়াহুর সরকারের চেয়ে উন্নত হবে এমন আশাও করতে পারছেন না তিনি।
বিজ্ঞাপন
সোমবার ফিলিস্তিনের সরকারের মন্ত্রীসভার সাপ্তাহিক বৈঠকে তিনি ইসরায়েলে ক্ষমতার পালাবদলে নতুন জোট সরকারের আগমনের ওপর আলোচনা করেন। সেখানে তিনি বলেন, ’১২ বছর ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় থাকার পর অবশেষে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বিদায় নিয়েছেন। তার বিদায়ের মধ্যে দিয়ে ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ও তাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এ যাবৎকালের সবচেয়ে বাজে অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটল।’
‘তবে ইসরায়েলের বর্তমান সরকার যে তার অতীত পূর্বসূরীর তুলনায় উদার হবে- এমন ভ্রান্তিতে আমাদের ভোগা উচিত নয়। কারণ, গাজা-পশ্চিম তীর-রামাল্লাসহ ফিলিস্তিন জুড়ে যেভাবে ইসরায়েলি বসতকাররা (সেটলার) আগ্রাসন চালাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে এই সরকার কোনো ব্যবস্থা নেবে এমন কোনো সম্ভাবনা এখনও আমরা দেখতে পাচ্ছি না।’
‘এবং আজ দায়িত্বগ্রহণের প্রথম দিন প্রধানমন্ত্রী বা নতুন সরকারের কোনো নেতা ইসরায়েলি সেটলারদের বিরুদ্ধে কোনো শব্দ উচ্চারণ করলেন না- আমরা তার নিন্দা জানাচ্ছি; এবং পাশাপাশি এই সতর্কবার্তা জানাচ্ছি - ফিলিস্তিনের মানুষ ও তাদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের প্রতি এই সরকার সম্মান না জানলে এই সরকারের কোনো ভবিষ্যৎ নেই।’
সর্বশেষ জাতীয় নির্বাচনে ইসরায়েলের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল লিকুদ পার্টিকে পরাজিত করে সরকার গঠন করেছে ইসরায়েলের ৭ টি রাজনৈতিক দলের জোট। রাজনৈতিক আদর্শসহ বিভিন্ন ইস্যুতে এই জোটভুক্ত দলগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য থাকলেও একটি বিষয়ে সবগুলো দল একমত, আর তা হলো তারা সবাই নেতানিয়াহু ও তার দল লিকুদ পার্টির বিরোধী।
বিশ্বের একমাত্র ইহুদিরাষ্ট্র ইসরায়েলের সরকারব্যবস্থা মন্ত্রীপরিষদশাসিত। দেশটির সংবিধান অনুযায়ী সরকারের মেয়াদ ৭ বছর। কয়েক বছর ধরে অস্থিরতা চলছে দেশটির জাতীয় রাজনীতিতে। গত দু’বছরে এই নিয়ে চতুর্থবারের মতো জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে ইসরায়েলে।
দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘকাল, একযুগেরও বেশি সময় প্রধানমন্ত্রীর পদে থেকেছেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু; কিন্তু গত নির্বাচনে অবিশ্বাস্যভাবে ইসরায়েলের বৃহত্তম রাজনৈতিক দল লিকুদ পার্টির এই নেতাকে হারিয়ে ক্ষমতায় আসীন হয়েছে ইসরায়েলের নবগঠিত জোট সরকার।
সংবিধান অনুযায়ী, নির্বাচনের পর গঠিত নতুন সরকারের বৈধতা ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটে গণভোটের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়। সোমবার এই গণভোট হয়েছে নেসেটে এবং সেখানেও ঘটেছে অবিশ্বাস্য ঘটনা।
নেসেটের মোট আসনসংখ্যা ১২০ টি। সোমবারের গণভোটে নতুন সরকারের পক্ষে পড়েছে ৬০ টি ভোট, বিপক্ষে পড়েছে ৫৯ টি ভোট। একজন নেসেট সদস্য এই দিন অনুপস্থিত ছিলেন।
সোমবার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন জোটসরকারের অন্তর্ভুক্ত দল ইয়ামিনা পার্টির নেতা নাফতালি বেনেট। দলগুলোর মধ্যকার চুক্তি অনুযায়ী, আগামী দুই বছর দেশের প্রধানমন্ত্রী থাকবেন তিনি; তারপর এ পদে আসবেন জোটের অন্যতম নেতৃস্থানীয় দল ইয়েশ আতিদ পার্টির নেতা ইয়ার লাপিদ।
সূত্র: এএফপি
এসএমডব্লিউ