মিয়ানমারে অপহরণের পর ২৫ শ্রমিককে হত্যা করেছে বিদ্রোহীরা
মিয়ানমারের বিচ্ছিন্নতাবাদী একটি গোষ্ঠী দেশটির পূর্বাঞ্চলের এক নির্মাণ স্থাপনার ২৫ শ্রমিককে অপহরণের পর হত্যা করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সোমবার দেশটির জান্তা নিয়ন্ত্রিত একটি গণমাধ্যমের খবরে জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল ডিফেন্স অর্গানাইজেশনের (কেএনডিও) বিরুদ্ধে এই অভিযোগ আনা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, গত মাসে কেএনডিওর সদস্যরা একটি নির্মাণ স্থাপনার ৪৭ শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যান। পরে এই শ্রমিকদের অন্তত ২৫ জনকে হত্যা করা হয়। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে কেএনডিওর মন্তব্য পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। দেশটির জান্তা সরকারের একজন মুখপাত্রও এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেননি।
বিজ্ঞাপন
গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে দেশটিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়েছে। দেশটির সীমান্তের বিভিন্ন রাজ্যের বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলো জান্তাবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়েছে।
দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার এবং সেনা নিয়ন্ত্রিত মায়াবতী টেলিভিশনে প্রচারিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, ঘন জঙ্গলের ভেতরে ২৫ জনের মরদেহ পড়ে আছে। এতে বলা হয়েছে, থাইল্যান্ড সীমান্তের কাছের মায়াবতী জেলার উহু ক্রিক সেতুতে কর্মরত ছিলেন এই শ্রমিকরা। গত ৩১ মে এই নির্মাণ স্থাপনার ৪৭ শ্রমিককে অপহরণ করে নিয়ে যায় কেএনডিওর সদস্যরা। অপহরণকৃতদের মধ্যে ১০ শিশু ও ছয় নারীও ছিলেন।
দ্য গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার বলছে, গত ১১ জুন সাতজনের মরদেহ খোঁজ পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে একজনের মরদেহ আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয় এবং অন্যদের হাত পেছন থেকে বাঁধা ছিল। পরদিন আরও ১৮ জনের মরদেহ পাওয়া যায়।
অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারের পূর্বাঞ্চলীয় শহরগুলোতে তীব্র লড়াই শুরু হয়েছে। প্রায় প্রত্যেকদিনের সংঘাতে হাজার হাজার মানুষ বাস্ত্যুচুত হয়ে পড়েছেন।
১৯৪৭ সাল থেকেই অধিক স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে আন্দোলন করে আসছে কেএনডিও। দেশটিতে সেনাবাহিনীর শাসনের কঠোর বিরোধিতা করেছে যে কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী কেএনডিও তাদের অন্যতম।
স্থানীয় মানবাধিকার সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স এসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স বলছে, ১ ফেব্রুয়ারির অভ্যুত্থানের পর সামরিক বাহিনী অন্তত ৮৬০ গণতন্ত্রকামীকে হত্যা করেছে। তবে নিহতের এই সংখ্যা আরও কম বলে দাবি করেছে জান্তা।
এসএস