ভারতের সরকারি পরিসংখ্যান
টিকার কোটি ডোজ পড়ে আছে বেসরকারি হাসপাতালে
ভারতজুড়ে যখন করোনাভাইরাসের টিকার ব্যাপক সঙ্কট দেখা দিয়েছে; তখন দেশটির সরকারি এক পরিসংখ্যানে বেসরকারি হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রয়োগের ভয়াবহ চিত্র উঠেছে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, দেশটির বেসরকারি হাসপাতালে এখন পর্যন্ত এক কোটি ২৯ লাখের বেশি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহ করা হলেও প্রয়োগ করা হয়েছে মাত্র ১৭ শতাংশ।
ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মে মাসে দেশজুড়ে ৭ কোটি ৪০ লাখ ডোজ টিকা সরবরাহ করা হয়েছে। এর মধ্যে এক কোটি ৮৫ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন বেসরকারি হাসপাতালগুলোর জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতালে ১ কোটি ২৯ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পৌঁছায়।
বিজ্ঞাপন
সরকারি পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, ভারতের বেসরকারি হাসপাতালগুলো ১ কোটি ২৯ লাখের বেশি ভ্যাকসিন পেলেও ব্যবহার করেছে মাত্র ২২ লাখ। এর ফলে অব্যবহৃত রয়েছে কোটির বেশি ডোজ ভ্যাকসিন।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, সরকারি হাসপাতালের তুলনায় বেসরকারি হাসপাতালে ভ্যাকসিনের চড়া দাম এবং সুরক্ষা নিয়ে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের কারণে লোকজন ভ্যাকসিন নেওয়া থেকে বিরত থাকছেন।
দেশটির সরকারি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কিছু গণমাধ্যমের খবরে বলা হচ্ছে যে, বেসরকারি হাসপাতালে ২৬ শতাংশ ভ্যাকসিন ডোজ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই হাসপাতালগুলোর জন্য মোট ভ্যাকসিনের সাড়ে ৭ শতাংশ বরাদ্দ রয়েছে। গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্য সঠিক নয় এবং সরকারি পরিসংখ্যানের সঙ্গে এই তথ্যের গড়মিল রয়েছে।
চলতি মাসের শুরুর দিকে বেসরকারি হাসপাতালে অত্যধিক দামে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বিক্রি হচ্ছে বলে বিরোধী দলগুলো অভিযোগ করে। পরে দেশটির সরকার বেসরকারি হাসপাতালে ভ্যাকসিনের সর্বোচ্চ মূল্য নির্ধারণ করে দেয়।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা কোভিশিল্ডের প্রত্যেক ডোজ ৭৮০ রুপি, রাশিয়ার স্পুটনিক-৫ এক হাজার ১৪৫ রুপি এবং ভারত বায়োটেকের তৈরি কোভ্যাক্সিনের দাম এক হাজার ৪১০ রুপি নির্ধারণ করা হয়। শুল্ক এবং হাসপাতালগুলোর সার্ভিস চার্জসহ টিকার এই মূল্য ঠিক করে দেয় দেশটির সরকার।
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিপর্যস্ত ভারতে এখন পর্যন্ত ২ কোটি ৪০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে। চলতি বছর শেষ হওয়ার আগেই দেশটির ১০৮ কোটি মানুষকে করোনা টিকা দেওয়ার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে ভারতের সরকার। ভারতের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, করোনা মহামারিতে এখন পর্যন্ত দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২ কোটি ৯৩ লাখ ৫৯ হাজারের বেশি এবং মারা গেছেন ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৮১ জন।
এসএস