১০০ কোটি ডোজ টিকার প্রতিশ্রুতি দিল বিশ্বের ধনী ৭ দেশ
যুক্তরাষ্ট্রসহ শিল্পোন্নত ৭ দেশের জোট জি-৭ করোনা ভাইরাসের অন্তত ১০০ কোটি ডোজ টিকা যেসব দেশে টিকার ঘাটতি আছে সেসব দেশে দেবে।
মহামারির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ও এর সমাপ্তি টানতে মিত্র দেশগুলোর প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের আহ্বানের পর যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এ ঘোষণা দিয়েছেন। বরিস জনসন জানিয়েছেন, ১০০ কোটি ডোজ টিকার অর্ধেক আসবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আর ১০ কোটি ডোজ দেবে যুক্তরাজ্য।
বিজ্ঞাপন
জি-৭ জোটের শীর্ষ নেতাদের সম্মেলন শুরুর আগে জনসন এ ঘোষণা দিয়েছেন। তার কিছুক্ষণ আগেই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট করোনা ভাইরাসের ৫০ কোটি ডোজ টিকা অনুদান দেওয়ার আগ্রহের কথা বলেন। এ ছাড়াও বড় অর্থনীতির দেশগুলোকে বিশ্বব্যাপী টিকাদান কর্মসূচিতে এগিয়ে আসতে সমন্বিত কর্মসূচির বিষয়ে জোর দেন তিনি।
বাইডেন বলেন, বন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে সঙ্গে নিয়ে আমরা মহামারি থেকে মুক্তির পথে হাঁটতে চাই। শুক্রবার এই জোটের বাকি নেতারা তাদের টিকা অনুদান দেওয়ার পরিকল্পনার রুপরেখা জানাবেন বলেও উল্লেখ করেন বাইডেন। যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ছাড়া এই জোটে আরও আছে কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি ও জাপান।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, যে ১০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার কথা যুক্তরাজ্য বলছে, তার ৫ কোটি ডোজ তারা আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে দেওয়া শুরু করবে। বাকি ৫ কোটি ডোজ তারা পরের বছর দেবে।
জি-৭ সম্মেলনে জোটের অন্যান্য নেতাদের কাছে থেকে টিকা হাতে বিশ্বের অন্যান্য দেশের পাশে দাঁড়ানোর এমন প্রতিশ্রুতি শুনতে চান জনসন। এক বিবৃতিতে তিনি এ কথা বলেছেন।
এরআগে বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের টিকার বিষয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানিয়ে ফরাসি প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাঁক্রো বলেন, ইউরোপেরও একই কাজ করা উচিত। চলতি বছরের মধ্যে ফ্রান্স অন্তত ৩ কোটি ডোজ টিকা অনুদান দেবে বলে ঘোষণা দেন তিনি।
এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, আমি মনে করে, ইউরোপীয় ইউনিয়নেরও যুক্তরাষ্ট্রের মতো অন্তত একটা লক্ষ্য থাকা উচিত।
বিশ্বের সব দেশ করোনা ভাইরাসের টিকা সমানভাবে পাচ্ছে না। বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর থেকেই জি-৭ জোটের নেতাদের ওপর বাড়িত একটা চাপ ছিল। যুক্তরাষ্ট্রে টিকার বড় মজুদ রয়েছে। আবার গেল কয়েক সপ্তাহে সেখানে টিকার চাহিদাও কমে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রে যে টিকা দিচ্ছে ও জি-৭ জোটের নেতাদের কাছ থেকে যে প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাচ্ছে তাতে বৈশ্বিক টিকাদান কর্মসূচি গতি পাবে বলে আশা বাইডেনের।
বাইডেন বলেন, আমরা কারো কাছ থেকে কিছু পাওয়ার জন্য বা বাণিজ্যিক কারণে এই টিকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিইনি। আমরা শুধুই মানুষের জীবন বাঁচানোর জন্য, মহামারি শেষ করতে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের পক্ষে যা কিছু করা সম্ভব, নৈতিকভাবে আমরা তার সবই করতে চায়।
যুক্তরাষ্ট্র ফাইজারের কাছ থেকে ৫০ কোটি ডোজ টিকা কিনে কোভ্যাক্স জোটের মাধ্যমে নিম্ন আয়ের ৯২টি দেশে এবং আফ্রিকান ইউনিয়নে এই টিকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
বাইডেন জানিয়েছেন, আগস্ট থেকেই টিকা পাঠানো শুরু হবে। চলতি বছরের মধ্যে ২০ কোটি ডোজ টিকা দেওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। আর বাকি ৩০ কোটি ডোজ আগামী বছরের প্রথমার্ধে পাঠিয়ে দেবে তারা
ওষুধ উৎপাদকদের সঙ্গে সরাসারি যোগাযোগের মাধ্যমে ধনী দেশগুলো টিকার কোটি কোটি ডোজ আটকে রাখায় টিকার জোট কোভ্যাক্সের কার্যক্রমে ধরীগতি ছিল।কোভ্যাক্স এ পর্যন্ত মাত্র ৮ কোটি কিছু বেশি টিকা কিছু দেশে পাঠাতে পেরেছে।
এনএফ