বেতনভাতা বৃদ্ধির দাবিতে নিউজিল্যান্ডে দেশজুড়ে ৩০ হাজার নার্স ধর্মঘটে গেছেন। দেশটির অনলাইন সংবাদমাধ্যম নিউজহাবের বরাত দিয়ে করা এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতের জাতীয় দৈনিক টাইমস অব ইন্ডিয়া।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে বেতনভাতা বৃদ্ধির দাবি জানিয়ে আসছিলেন নিউজিল্যান্ডের নার্সরা। সম্প্রতি দাবিতে সাড়া দিয়ে নার্সদের মাসিক বেতন ১ দশমিক ৪ শতাংশ বাড়িয়েছে দেশটির সরকার।

কিন্তু সরকারের এই পদক্ষেপ সন্তুষ্ট করতে পারেনি তাদের। নিউজিল্যান্ডের নার্সদের সংগঠন নিউজিল্যান্ড নার্সেস অর্গানাইজেশন (এনজেডএনও) ৭ জুন এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সংগঠনের পক্ষ থেকে ১৭ শতাংশ বেতন বাড়ানোর দাবি জানানো হয়েছিল।

দাবির পক্ষে ৮ জুন থেকে রাজধানী ওয়েলিংটনসহ দেশের বিভিন্ন শহরে কর্মবিরতি পালন করছেন নার্সরা। পাশাপাশি এইদিন এনজেডএনও’র নেতৃত্বে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশও করেছেন তারা।

৭ জুনের বিবৃতিতে এনজেডএনওর পক্ষ থেকে বলা হয়, বর্তমানে নার্সদের যে বেতন-কাঠামো তা খুবই নিম্ন। এ কারণে দেশের তরুণ-তরুণীরা এই পেশায় আসতে চান না। বছরের পর বছর ধরে এই অবস্থা চলতে থাকায় দেশের হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে নার্সদের ঘাটতি দেখা দিয়েছে।

ফলে, একদিকে যেমন কর্তব্যরত নার্সদের ওপর কাজের চাপ প্রতিদিনই বাড়ছে, অন্যদিকে হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলোতে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরাও যথাযথ সেবা পাচ্ছেন না। বিশেষ করে চলমান কোভিড পরিস্থিতিতে এই সংকট তীব্র আকারে দেখা দিয়েছে।

এনজেএনও’র জ্যেষ্ঠ নেত্রী এবং ক্লিনিক্যাল নার্স স্পেশালিস্ট ডায়ানে ম্যাককুলক নিউজিল্যান্ডের সংবাদমাধ্যম নিউজহাবকে সরকারের সাম্প্রতিক বেতন বৃদ্ধির ঘোষণায় ক্ষোভ জানিয়ে বলেন, ‘গত বছর মহামারি শুরুর পর থেকে আমরা সম্মুখসারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করেছি। তখন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নার্সরা তাদের পেশাগত দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে শুধু যে নিজেদের জীবন হুমকির মুখে ফেলছে তাই নয়, তাদের পরিবারের সদস্যদের জীবনও হুমকির মুখে; আর সরকারে তরফ থেকে এই হচ্ছে তার প্রতিদান।’

নার্সদের ধর্মঘটের জেরে দেশজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়েছে নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা অর্ডার্নের। সমালোচকরা বলছেন, মহমারিকে সামাল দিয়ে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখতে সক্ষম হলেও চিকিৎসাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমান যে অসাম্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে, সে ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে তার করোন আগ্রহ নেই।

নিউজিল্যান্ডের পেশাদার চিকিৎসক-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মীদের সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন অব স্যালারিড মেডিকেল স্পেশালিস্টের নেতা ডা. জুলিয়ান ভায়াস নিউজহাবকে বলেন, ‘চিকিৎসার পুরো প্রকিয়ায় সমন্বয় সাধনের কাজ করেন নার্সরা। যদি তারা ধর্মঘটে যায়, সেক্ষেত্রে এটা নিশ্চিত যে বড় ধরনের কোনো সমস্যা হয়েছে এবং এই সমস্যা যত দ্রুত সম্ভব সমাধান করা প্রয়োজন।’

সূত্র: নিউজহাব, টাইমস অব ইন্ডিয়া

এসএমডব্লিউ