ভারতের জাতির জনক ও অহিংস আন্দোলনের রূপকার মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্রীকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। তার নাম আশিস লতা রামগোবিন। আর্থিক প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে ৫৬ বছর বয়সী এই নারীর বিরুদ্ধে সোমবার (৭ জুন) কারাদণ্ডের রায় ঘোষণা করেন দক্ষিণ আফ্রিকার একটি আদালত।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস ও হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকায় এস আর মহারাজ নামে এক ব্যবসায়ীর কাছ থেকে আশিস লতা রামগোবিন ৬০ লাখ র‌্যান্ড (দক্ষিণ আফ্রিকান মুদ্রা) নিয়েছিলেন। ভারত থেকে দেশটিতে পণ্য রফতানির নামে ওই টাকা নেন তিনি। এছাড়া ব্যবসার লভ্যাংশ দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ওই ব্যবসায়ীকে।

মহাত্মা গান্ধীর প্রপৌত্রী আশিস লতা রামগোবিনকে সাত বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত

পরে চুক্তি অনুযায়ী কোনো পণ্য রফতানি করা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। একপর্যায়ে আদালতে মামলা হলে শুনানির পর সোমবার দক্ষিণ আফ্রিকার ডারবান শহরের স্পেশালাইজড কমার্শিয়াল ক্রাইম কোর্ট আশিস লতা রামগোবিনকে দোষী সাব্যস্ত করেন এবং ৭ বছরের কারাদণ্ড দেন।

দক্ষিণ আফ্রিকার ন্যাশনাল প্রসিকিউটিং অথরিটি (এনপিএ) সোমবার আদালতে জানিয়েছে, ২০১৫ সালে ব্যবসায়ী এস আর মহারাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় লতার। মহারাজের সংস্থা ভারত থেকে কাপড় আমদানি করে এবং জুতা তৈরি করে তা বিভিন্ন দেশে রফতানি করে। লতা ওই ব্যবসায়ীকে তার রফতানি সংক্রান্ত কাজের কথা বলে প্রতারণার ফাঁদে ফেলেন এবং ওই অর্থ হাতিয়ে নেন।

সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, এই মামলার শুরু হয় ২০১৫ সালে। তখন প্রাথমিক শুনানির পর স্থানীয় মুদ্রা ৫০ হাজার র‌্যান্ডের বিনিময়ে জামিন পান লতা রামগোবিন। সোমবার ফের মামলার শুনানি হয়। সেখানে সব তথ্য প্রমাণই লতার বিরুদ্ধে পেশ করা হয়। আদালতকে জানানো হয়- লতা কোনো দ্রব্যই ভারত থেকে রফতানি করেননি, যার জন্য বিপুল পরিমাণ অর্থ তিনি নিয়েছিলেন।

ভারত থেকে এস আর মহারাজের কোম্পানি লিনেনের মতো কাপড় ও জুতা আমদানি-রফতানির কাজ করে। কোম্পানির হয়ে তিনটি কন্টেইনারে করে লিনেন কাপড় রফতানি করেছেন বলে লতা রামগোবিন সেসময় মহারাজকে জানান। অথচ কোনো পণ্যই রফতানি করা হয়নি। লতার বিরুদ্ধে ব্যবসায়ীকে ভুয়া চালান দেওয়ারও অভিযোগ রয়েছে।

উল্লেখ্য, মহাত্মা গান্ধীর দ্বিতীয় ছেলে মনিলাল গান্ধীর মেয়ে এলা গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকার জনপ্রিয় মানবাধিকার কর্মী এবং সাবেক আইনপ্রণেতা। তারই মেয়ে লতা রামগোবিন।

টিএম