বিশ্বজুড়ে টিকা বিতরণে বৈষম্য
২০০ কোটি ডোজের ৬০ শতাংশই পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র-চীন-ভারত
এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে নভেল করোনাভাইরাসের প্রায় ২০০ কোটি ডোজ টিকা বিতরণ করা হয়েছে— যার ৬০ শতাংশই গেছে মাত্র তিনটি দেশে। এই তিন দেশ হলো যুক্তরাষ্ট্র, ভারত এবং চীন। শুক্রবার এক সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মহাপরিচালক টেড্রোস আধানম গ্রেব্রেইয়েসুসের জ্যেষ্ঠ উপদেষ্টা ব্রুস অ্যালওয়ার্ড এই তথ্য জানিয়েছেন।
তিনি বলেছেন, চলতি সপ্তাহে আমরা করোনাভাইরাসের সহজলভ্য ভ্যাকসিনের ২০০ কোটি ডোজ বিতরণের মাইলফলক পেরিয়ে যাবো। এসব ভ্যাকসিন বিশ্বের ২১২টিরও বেশি দেশে বিতরণ করা হচ্ছে।
বিজ্ঞাপন
ব্রুস অ্যালওয়ার্ড বলেন, ২০০ কোটি ডোজ ভ্যাকসিনের দিকে যদি আমরা তাকাই তাহলে দেখবো— এর ৭৫ শতাংশের বেশি ডোজ গেছে মাত্র ১০টি দেশে। আর এসব ডোজের ৬০ শতাংশ পেয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, চীন এবং ভারত।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এই কর্মকর্তা বলেছেন, বিশ্বের ১২৭টি দেশে করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন বিতরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে কোভ্যাক্স। ভ্যাকসিন প্রাপ্তি যাদের জন্য চ্যালেঞ্জ; তাদের মধ্যে বেশ কয়েকটি দেশ কোভ্যাক্সের কল্যাণে টিকাদান শুরু করছে।
ব্রুস অ্যালওয়ার্ড বলেন, চীন, ভারত এবং যুক্তরাষ্ট্রে যে ২০০ কোটি ডোজ গেছে তার ৬০ শতাংশই স্থানীয়ভাবে উৎপাদন, সংগ্রহ ও ব্যবহার করা হয়েছে। ভ্যাকসিন বিতরণের এই বৈষম্যের বিপরীত দিকও তুলে ধরেছেন ব্রুস অ্যালওয়ার্ড। তিনি বলেছেন, বিশ্বের নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে মাত্র ০ দশমিক ৫ শতাংশ ভ্যাকসিন গেছে। কিন্তু এসব দেশে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১০ শতাংশ বসবাস করে।
দরিদ্র দেশগুলোর করোনা টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গঠিত বৈশ্বিক উদ্যোগ কোভ্যাক্সের মাধ্যমে এখন পর্যন্ত প্রায় ৮ কোটি ডোজ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়া ভারতে করোনাভাইরাসের ধ্বংসাত্মক দ্বিতীয় ঢেউয়ের কারণে টিকার সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ায় ভ্যাকসিনের আরও প্রায় ২০ কোটি ডোজ বিতরণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন ব্রুস অ্যালওয়ার্ড।
তিনি বলেছেন, এই সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে সরবরাহ বিঘ্নিত হওয়ার কারণে। ভারত এবং অন্যদের সমস্যার কারণে আমরা এই বাধার সম্মুখীন হয়েছি। আমরা এই শূন্যতা পূরণে সমস্যার মুখোমুখি হয়েছি।
ব্রুস অ্যালওয়ার্ড বলেছেন, কোভ্যাক্সের মাধ্যমে আরও ১৫ কোটি ডোজ ভ্যাকসিন সরবরাহের প্রতিশ্রুতি ছিল। কিন্তু এটাতে বর্তমানে দু’টি বড় ধরনের সমস্যা রয়েছে। প্রথমত, এই প্রতিশ্রুতির খুব সামান্যই জুন-জুলাইয়ের মাধ্যমে পূরণ করা সম্ভব। এর মানে হলো আমাদের এই শূন্যতা থাকবেই।
দ্বিতীয় সমস্যাটি হলো ভ্যাকসিন ডোজের প্রাপ্তি। আমরা যদি চলতি বছরেই বিশ্বের ৩০-৪০ শতাংশ মানুষকে ভ্যাকসিন দিতে চাই, তাহলে এখন থেকে আগামী সেপ্টেম্বর শেষের আগেই আরও ২৫ কোটি মানুষকে টিকার আওতায় আনতে হবে।
এসএস