করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে চিকিৎসক ও তার পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়া, বৃত্তি বাড়ানো-সহ একাধিক দাবিতে আন্দোলন করছিলেন চিকিৎসকরা। আন্দোলনের অংশ হিসেবে নামেন ধর্মঘটেও। এই পরিস্থিতিতে ডাক্তারদের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাজে ফিরতে নির্দেশ দেয় আদালত। প্রতিবাদে পদত্যাগ করেছেন প্রায় ৩ হাজার চিকিৎসক। শুক্রবার (৪ জুন) ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের মধ্যপ্রদেশে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বলছে, গত সোমবার থেকে এই ধর্মঘট শুরু করেছিলেন ডাক্তাররা। তাদের মূল দাবি ছিল, যেহেতু তারা করোনা রোগীদের চিকিৎসা করছেন তাই তাদের ভাইরাসে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেকটাই বেশি। সেজন্য তাদের ও তাদের পরিবারের সদস্যদের বিনামূল্যে করোনা চিকিৎসা দিতে হবে সরকারকে। পাশাপাশি চিকিৎসকদের বৃত্তির পরিমাণ ২৪ শতাংশ বাড়াতে হবে।

তবে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতিকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ধর্মঘট তুলে নিয়ে কাজে ফেরার নির্দেশ দেয় মধ্যপ্রদেশের হাইকোর্ট। অন্যথায় দেওয়া হয় ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি। বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে এমনই নির্দেশ ছিল হাইকোর্টের।

এরপরই পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন ডাক্তাররা। এখনও পর্যন্ত প্রায় ৩ হাজার ডাক্তার পদত্যাগ করেছেন। সেই সঙ্গে তারা জানিয়ে দিয়েছেন, হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানাতে উচ্চতর আদালতের দ্বারস্থ হবেন তারা। তবে চলমান করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের ডাক্তারদের এই পদত্যাগের ঘটনায় উদ্বিগ্ন প্রশাসন।

এদিকে হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে নিজেদের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ডাক্তারদের সংগঠন ‘মধ্যপ্রদেশ জুনিয়র ডাক্তার অ্যাসোসিয়েশন’। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অঙ্কিতা ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, ‘সরকার এখনও আমাদের দাবি মেনে নেয়নি। কেবল আশ্বাস দিয়েছে মাত্র। তাই এখনই আমরা ধর্মঘট তুলছি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সরকার বলছে জুনিয়র ডাক্তাররা নাকি ব্ল্যাকমেইল করছে। এটা ঠিক কথা নয়। আমরা যদি ব্ল্যোকমেইলই করতাম, তাহলে রোগীর সংখ্যা কমছে কী করে?’

সংগঠনের সভাপতি ডা. অরবিন্দ মীনা বলেছেন, সরকার বৃত্তি ১৭ শতাংশ বাড়ানোর কথা জানালেও, তাদের দাবি ২৪ শতাংশ। পাশাপাশি গত ৬ মে মধ্যপ্রদেশ সরকার তাদের সব দাবি মেনে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিল‌েও শেষ পর্য‌ন্ত তা বাস্তবায়িত হয়নি। তাই কর্মবিরতি চলছে ও চলবে।

এদিকে ডাক্তারদের এই ধর্মঘটে ক্ষুব্ধ মধ্যপ্রদেশের শিবরাজ সিং চৌহানের সরকার। রাজ্যের মেডিকেল শিক্ষামন্ত্রী বিশ্বাস সারং জানিয়েছেন, যেভাবে দলবদ্ধ ভাবে পদত্যাগ করতে শুরু করেছেন ডাক্তাররা তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। এটা ডাক্তারদের একগুঁয়ে মনের পরিচয়।

টিএম