প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দীন ইয়াসিনের পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী আজ মঙ্গলবার থেকে সর্বাত্মক লকডাউন কার্যকর হলো মালয়েশিয়ায়। সাম্প্রতিক সময়ে দেশটিতে টানা রেকর্ড করোনা রোগী শনাক্ত হওয়ার কারণে গত শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে প্রধামন্ত্রী লকডাউনের ঘোষণা দেন। 

মুহিদ্দীনের ঘোষণা অনুযায়ী, আজ ১ জুন থেকে আগামী ১৪ জুন পর্যন্ত সমস্ত সামাজিক-অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ক্ষেত্রে কঠোর লকডাউন নিষেধাজ্ঞা বলবৎ থাকবে। শুধু জরুরি সেবা ও অর্থনৈতিক খাতের কার্যক্রম চলবে। এই তালিকা তৈরি করেছে জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ। 

রয়টার্স লিখেছে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে করোনার বিস্তার আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছেই। বিশেষ করে করোনার অতি সংক্রামক ধরনের কারণে। আক্রান্তদের বেশিরভাগই তরুণ ও যুবক। এছাড়া হাসপাতালগুলোতেও সংকট দেখা দিয়েছে।

সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দুই সপ্তাহের এই লকডাউনে যদি করোনা সংক্রমণের লাগাম টেনে ধরা যায় তাহলে লকডাউন শেষে কিছু খাত পরের চার সপ্তাহের জন্য সচল করে দেবে। এই চার সপ্তাহ শেষ হওয়ার পর আগের মতো সব অর্থনৈতিক ও ব্যবসায়িক কার্যক্রম চলবে।

মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘সম্প্রতি দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে পরিস্থিতি আরও মারাত্মক আকার ধারণ করার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। এতে করে দেশজুড়ে কোভিড হাসপাতালগুলোর স্বাস্থ্যসেবার সক্ষমতা সীমিত হয়ে পড়ছে; যা ভীষণ উদ্বেগের বিষয়।’  

প্রধানমন্ত্রী মুহিদ্দীন ইয়াসিন আরও জানিয়েছেন, সর্বাত্মক লকডাউনের কারণে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে যাবে। এর ফলে যেসব ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হবেন তাদের জন্য ইতোমধ্যে অবশ্য সরকারিভাবে ত্রাণ কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মালয়েশিয়ায় করোনা টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। সমালোচকরা বলছেন, টিকাদানে গতি নেই। গত বৃহস্পতিবার পর্যন্ত দেশটির মাত্র ১৭ লাখ মানুষ অন্তত টিকার একটি করে ডোজ পেয়েছেন। টিকাদানের গতি যে আগামীতে বাড়বে তারও কোনো লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। 

করোনায় দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সবচেয়ে বিপর্যস্ত মালয়েশিয়ায় ইতোমধ্যে প্রায় দুই হাজার ৮০০ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। মোট প্রাণহানির ৪০ শতাংশের বেশি হয়েছে মে মাসে। গত সপ্তাহজুড়ে রেকর্ড দৈনিক আক্রান্তের পর মোট আক্রান্ত ৫ লাখ ৭০ হাজার ছাড়িয়েছে।

এএস