আফগানিস্তানের কাপিসা প্রদেশের তাগাব জেলায় বিয়ের আসরে মর্টার গোলার আঘাতে নারী ও শিশুসহ অন্তত ৬ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন আরও চারজন। গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে এই হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তারা।

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফাওয়াদ আমান রোববার এই হামলার জন্য তালেবান জঙ্গিদের দায়ী করে এক টুইটবার্তায় বলেন, ‘কাপিসা প্রদেশে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে তালেবান জঙ্গিদের ছোড়া গোলার আঘাতে ৬ জন নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন চারজন।’

আফগানিস্তানের যে কয়েকটি অঞ্চলে তালেবান জঙ্গিগোষ্ঠী ও আফগান সরকারের বাহিনীর মধ্যে লড়াই চলছে তাগাব সেগুলোর অন্যতম। কাপিসা প্রাদেশিক পুলিশের মুখপাত্র শায়েক শোরেশও এই হামলার ঘটনা তালেবান জঙ্গিদের দায়ী করেছেন।

ফ্রান্সের বার্তাসংস্থা এএফপিকে শায়েক শোরেশ বলেন, যে বাড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠান হচ্ছিল, তার কাছাকাছি আফগানিস্তান সামরিক বাহিনীর একটি চেকপোস্ট আছে। হামলাকারী জঙ্গিরা সেই চেকপোস্টটিকে লক্ষ্য করে মর্টার শেল ছুড়েছিল।

কিন্তু ‘টার্গেট মিস’ হওয়ায় সেটি চেকপোস্টে আঘাত না করে পার্শ্ববর্তী বিয়ে বাড়িতে এসে পড়ে।

আফগানিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফাওয়াদ আমান ও শায়েক শোরেশ যদিও জানিয়েছেন, হামলায় ৬ জন নিহত ও ৪ জন আহত হয়েছেন, কিন্তু  কিন্তু রাজধানী কাবুলের ঊর্ধ্বতন নিরাপত্তা কর্মকর্তারা উল্লেখ করেছেন, এ ঘটনায় অন্তত ১০ জন নিহত ও ১৮ জন আহত হয়েছেন।

তালেবান গোষ্ঠী অবশ্য এই হামলার দায় অস্বীকার করেছে। এক বিবৃতিতে এই জঙ্গি গোষ্ঠীর নেতারা জানিয়েছেন, আফগানিস্তানের সামরিক বাহিনী এই হামলা চালিয়েছে।

যদিও তালেবান গোষ্ঠী বরাবরই দাবি করে আছে, দেশের সাধারণ নাগরিকদের সঙ্গে তাদের কোনো শত্রুতা নেই, কিন্তু গত ছয় মাসের ও বেশি সময় ধরে তালেবানদের বোমা, বন্দুক ও গোলা হামলায় প্রতিদিনই প্রাণ হারচ্ছেন দেশটির সাধারণ মানুষ।

রোববার আফগানিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শুধু মে মাসেই সড়কের ধারে বোমা বিস্ফোরণ ও অন্যান্য হামলায় ২৫০ জন সাধারণ নাগরিক নিহত হয়েছেন, আহত হয়েছেন ৫ শতাধিক।

শনিবারই (২৯ মে) দেশটির রাজধানী কাবুলের উত্তরে পারওয়ান প্রদেশে একটি বাসকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া হয়। এতে দেশটির দুই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ নিহত হন ৪ জন, আহত হন আরও অনেকে।

আফগানিস্তানে মোতায়েন সব সেনা ১১ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরিয়ে নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে সৈন্য প্রত্যাহার শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। গত মাসে ওয়াশিংটনের ওই ঘোষণার পর থেকে আফগানিস্তানজুড়ে সহিংসতা বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। 

গত মাসে জাতিসংঘ জানিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে আফগানিস্তানে সরকারি বাহিনী ও তালেবান বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াইয়ে প্রায় এক হাজার ৮০০ বেসামরিক নিহত হয়েছেন। দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি আলোচনা চললেও মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে দিনকে দিন।

সূত্র: এএফপি, রয়টার্স

এসএমডব্লিউ