হেলিকপ্টারে থানায় এসে আত্মসমর্পণ আসামির
পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে অনেক সময়ই নানা পন্থা বা স্টাইল অবলম্বন করেন অপরাধীরা। বিশ্বজুড়েই এমন হয়ে আসছে। তবে নিউজিল্যান্ডের পলাতক অপরাধী জেমস ব্রায়ান্ট যেভাবে পুলিশের হাতে ধরা দিয়েছেন, তা এক কথায় অভাবনীয়।
নিজের টাকায় ভাড়া করা হেলিকপ্টারে করে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেছেন তিনি। বৃহস্পতিবার নিউজিল্যান্ডের ডানেডিন প্রদেশে ঘটেছে এই ঘটনা।
বিজ্ঞাপন
আর এ কাজে যিনি তাকে সহযোগিতা করেছেন, সেই আর্থার টেইলরও নিজেও একজন কুখ্যাত ও দাগী অপরাধী। কয়েকবছর কারাবাসের পর বর্তমানে প্যারোলে মুক্ত আছেন টেইলর। প্যারোলে থাকা অবস্থায় বর্তমানে কয়েদিদের নানা কাজে সহায়তা করেন তিনি।
নিউজিল্যান্ড পুলিশের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র রাখা, সেই আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা এবং মানুষকে আহত করার অভিযোগে সম্প্রতি জেমস ব্রায়ান্টের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় গ্রেফতার এড়াতে গা ঢাকা দিয়েছিলেন ব্রায়ান্ট।
ইতোমধ্যে তাকে ভয়ঙ্কর ব্যক্তি হিসেবে উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপণ দিয়েছে পুলিশ। সেখানে জনগণকে আহ্বান জানানো হয়েছে, এই ব্যক্তির সঙ্গে যেনো কোনোভাবেই কেউ বাক-বিতণ্ডায় না জড়ান।
মামলা ও পুলিশের গ্রেফতারি পরোয়ানা এড়াতে নিউজিল্যান্ডের নর্থ ওটাগো প্রদেশে পালিয়ে যান জেমস ব্রায়ান্ট। সেখানকার ছোট্ট শহর ওয়াইয়ানাকুরায় প্রায় ৫ সপ্তাহ আত্মগোপন করেছিলেন তিনি।
নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় পত্রিকা ওটাগো টাইমসকে এক সাক্ষাৎকারে ব্রায়ান্ট বলেন, ওয়াইয়ানাকুরায় বেশ ভালোই দিন কাটছিল তার; কিন্তু যখন তিনি জানতে পারেন, পুলিশ তাকে ভয়ঙ্কর ব্যক্তি হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং লোকজনকে তার সঙ্গে কথা বলা বা মেশার ব্যাপারে সতর্ক করেছে তখন থেকে অস্বস্তি শুরু হয় ব্রায়ান্টের।
এক পর্যায়ে তিনি আর্থার টেইলরের শরণাপন্ন হন ব্রায়ান্ট। দু’জনের মধ্যে অবশ্য আগে থেকেই পরিচয় ও বন্ধুত্ব ছিল। টেইলরের ওয়েবসাইট গঠন করার সময় একসময় তাকে সহযোগিতা করেছিলেন ব্রায়ান্ট। তখন থেকেই তাদের বন্ধুত্ব শুরু হয়।
ব্রায়ন্ট তার সমস্যার কথা খুলে বললে তাকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণের পরামর্শ দেন তিনি। ব্রায়ান্টও তা মেনে নেন। তারপর হেলিকপ্টারে ভাড়া করে সরাসরি ডানেডিনের কেন্দ্রীয় পুলিশ স্টেশনে এসে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।
হেলিকপ্টারে ব্রায়ান্টে সঙ্গী হিসেবে টেইলরও ছিলেন। ব্রায়ান্টকে হেফাজতে নিয়ে যাওয়ার পর থানার সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘পুরো পথ আমরা দুই বন্ধুতে আড্ডা দিতে দিতে এসেছি। হেলিকপ্টারে ওঠার আগে ওয়াইয়ানাকুরায় একটি দামী রেস্তোঁরায় লাঞ্চ করেছি আমরা। সময়টা সত্যিই খুব উপভোগ্য ছিল।’
সাংবাদিকদের টেইলর আরও বলেন, হেলিকপ্টারটি নিজের টাকায় ভাড়া করেছেন ব্রায়ান্ট; কারণ, তিনি এভাবেই থানায় যেতে চেয়েছিলেন।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যমের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, নিউজিল্যান্ডের স্থানীয় সময় বিকেল চারটায় ব্রায়ান্টকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এ সময় কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি।
সূত্র: বিবিসি
এসএমডব্লিউ