দক্ষিণ ইতালির বেলকাস্ত্রোতে প্রায় ১২০০ লোক বাস করেন

ইউরোপের দেশ ইতালির ছোট একটি গ্রাম তার বাসিন্দাদের গুরুতর অসুস্থ হতে নিষেধ করেছে। স্থানীয় মেয়র এ সংক্রান্ত একটি ডিক্রিও জারি করেছেন।

এমনকি ওই ডিক্রিতে বাসিন্দাদের “ক্ষতিকারক হতে পারে এমন আচরণে জড়িত না হতে এবং ঘরোয়া দুর্ঘটনা এড়াতে” এবং “অতি ঘনঘন বাড়ি থেকে বের না হতেও” আদেশ দেওয়া হয়েছে।

মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

স্থানীয় মেয়র আন্তোনিও টর্চিয়ার ওই ডিক্রিতে বলা হয়েছে, বেলকাস্ত্রোতে বসবাসকারী ব্যক্তিদের “... এমন অসুস্থতা এড়াতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যার জন্য জরুরি চিকিৎসা সহায়তার প্রয়োজন হতে পারে।”

বিবিসি বলছে, বেলকাস্ত্রো গ্রামটি ক্যালাব্রিয়ার দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত এবং এটি ইতালির অন্যতম দরিদ্রতম অঞ্চল।

টর্চিয়া বলেন, এই পদক্ষেপটি “স্পষ্টতই একটি হাস্যকর উস্কানি”। তবে স্থানীয় স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার ত্রুটিগুলো তুলে ধরতে আঞ্চলিক কর্তৃপক্ষকে তিনি যে জরুরি নোটিশ পাঠিয়েছিলেন তার চেয়ে এই পদক্ষেপের প্রভাব বেশি।

মেয়র বলেছেন, বেলকাস্ত্রোর ১২০০ জন বাসিন্দার প্রায় অর্ধেকই ৬৫ বছরের বেশি বয়সী এবং সেখান থেকে নিকটতম স্বাস্থ্যকেন্দ্র ৪৫ কিলোমিটার (২৮ মাইল) দূরে অবস্থিত। তিনি আরও বলেছেন, ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কেবল একটি রাস্তা দিয়েই যাওয়া যায়, আর সেই রাস্তার সর্বোচ্চ গতিসীমা শুধুমাত্র ঘণ্টায় ৩০ কিলোমিটার (১৮ মাইল)।

আবার ওই গ্রামের অন-কল ডাক্তার সার্জারিটিও শুধুমাত্র বিক্ষিপ্তভাবে খোলা থাকে এবং সপ্তাহান্তে ও ছুটির দিনগুলোতে বা ওয়ার্কিং আওয়ারের পরে সেটি কোনও স্বাস্থ্যসেবা দেয় না।

মেয়র টর্চিয়া ইতালীয় টিভিকে বলেন, “এখানে নিরাপদ বোধ করা কঠিন যখন আপনি জানেন যে— আপনার যদি সহায়তার প্রয়োজন হয় তবে আপনার একমাত্র আশা হচ্ছে সময়মতো দূরের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পৌঁছানো এবং রাস্তাগুলোর যা অবস্থা তা প্রায় ‘যেকোনও অসুস্থতার চেয়েও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ’।”

জারি করা ওই ডিক্রির অংশ হিসাবে গ্রামের বাসিন্দাদের জন্য “ক্ষতিকারক হতে পারে এমন আচরণে জড়িত না হতে এবং ঘরোয়া দুর্ঘটনা এড়াতে” এবং “অতি ঘনঘন বাড়ি থেকে বের না হওয়া, ভ্রমণ বা খেলাধুলা ও অনুশীলন না করার এবং (এর পরিবর্তে) বেশিরভাগ সময় বিশ্রাম নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।”

অবশ্য এই নতুন নিয়মগুলো কীভাবে প্রয়োগ করা হবে তা স্পষ্ট নয়।

বিবিসি বলছে, ক্যালাব্রিয়ার কম জনবহুল এই অঞ্চলটি দেশের অন্যতম দরিদ্রতম অঞ্চল। রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনা এবং মাফিয়া হস্তক্ষেপ সেখানকার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করে দিয়েছে, যা প্রায় ১৫ বছর আগে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ প্রশাসনের অধীনে রাখা হয়েছিল।

২০০৯ সাল থেকে এই অঞ্চলের আঠারোটি হাসপাতাল বন্ধ রয়েছে।

টিএম