দুবাইয়ের শাসক এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ মোহাম্মদ বিন রাশেদ আল মাকতুম। ১৯৪৯ সালে জন্ম নেওয়া শেখ মোহাম্মদ আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার আগে দুবাই পুলিশের প্রধানের পদে ছিলেন। শেখ রাশেদ বিন সাইদ আল মাকতুমের তৃতীয় পুত্র তিনি। তেলসমৃদ্ধ মধ্যপ্রাচ্যের জটিল রাজনীতির কেন্দ্রে থাকা আমিরাতের ভাইস-প্রেসিডেন্টও এই শেখ মোহাম্মদ, সঙ্গে দুবাইয়ের শাসকও তিনি। তার বর্তমান ও সাবেক মিলে ছয় জন স্ত্রী রয়েছেন বলে তথ্য পাওয়া যায়। এ ছয় স্ত্রীর ঘরে তার রয়েছে ৩০ জন সন্তান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজনীতি, অর্থনীতিসহ ধনকুবের এই প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিজীবনের নানা দিক উঠে এসেছে তার নিজের লেখা  ‘কিস্সাতি’ (আমার গল্প) বইটিতে। পঞ্চাশ পর্বে সে গ্রন্থ থেকেই নানা দিক তুলে এনেছেন মুহাম্মাদ শোয়াইব। আজ থাকছে ১৩তম পর্ব। 


প্রত্যেকেরই নিজের মতো একটা জায়গা থাকে। যেখানে সে জাগতিক সব কিছু ছেড়ে খানিক আশ্রয় নিতে পারে সম্পূর্ণ নিজের মতো করে। ঘর-সংসারের টানাপোড়েন যেখানে পৌঁছায় না। সেই আশ্রয়ে একেবারে নিজের মতো করে সাধনা করা যায় বা দীর্ঘ বিশ্রাম নেওয়া যায়।   

যখন আমি ছোট, তখন থেকেই আমার সেরকম একটা জায়গা ছিল। জাবেল প্রাসাদের পশ্চিমাংশে আমাদের একটি ছোট ঘর ছিল। যার মেঝে ছিল বালুর। আমার বাবা সেই ঘরে বাজপাখি শিকার করে রাখতেন। আমার বাবার ব্যস্ততা বাড়ার পর তিনি আমাকে ঘরটির যত্ন নেওয়ার দায়িত্ব দেন। আমি নিজের মতো করে ঘরটির যত্ন নিতে শুরু করি।  

আমার মনে আছে বাবা একদিন বিকেলে আমাকে ওই ঘরে দেখতে আসেন। আমি তখন বালুর ওপর বসেছিলাম। ওই ঘর নিয়েই ব্যস্ত ছিলাম আমি তখন।  হঠাৎ দেখলাম লম্বা একটা ছায়া সরে গেল ঘরের দরজা থেকে। আমি ঘুরে দেখলাম আমার বাবা দাঁড়িয়ে সেখানে। কিন্তু আমার মাকে ডেকে তিনি সেখান থেকে হাসতে হাসতে সরে যান।  

আমার মা ও বাবা আমার কাছে দাঁড়িয়ে হাসতে হাসতে কী যেন বলছিলেন। কিন্তু তাদের হাসির শব্দের কারণে তাদের কথাগুলো আমি বুঝতে পারছিলাম না।  

দ্বাদশ পর্ব : বাবার কাছ থেকে যে তিনটি শিক্ষা পেয়েছিলাম

ঘরটির দেখভালের দায়িত্ব আমি পাওয়ার পর থেকে ততদিনে সেটি বাজপাখির ঘর থেকে শুরু করে বিভিন্ন প্রাণীদের ঘরে পরিণত হয়েছে। ওই ঘরে আমি অনেক বিচ্ছু ও সাপ ধরে এনে রেখেছিলাম। সাপের বাক্সগুলো একটির ওপর একটি রেখেছিলাম। মাছ রাখার জন্য ছোট করে একটি কুয়াও তৈরি করেছিলাম। 

ঘরটা ছিল মূলত আমার প্রকৃতি নানা বিষয় শেখার একটা জায়গা। আমার শখগুলোও আলোর মুখ দেখতো ওই ঘরে। 

আমার নোটবুকগুলোতে আমি নানা রকম জিনিস আঁকতাম। আমার আঁকা ছবি দিয়েই নোটবুকগুলো আমি ভরিয়ে তুলেছিলাম। সেগুলো ছিল আমার শিক্ষাগত উপভোগ্য বিষয়। 

এই ঘর থেকেই আমি শিক্ষা পেয়েছি অভিজ্ঞতার মূল্য সম্পর্কে। ওই ঘর থেকেই আমি জানতে পেরেছি অভিজ্ঞতা হলো এমন এক সম্পদ যা জীবনে কেউ একবার অর্জন করলে সারাজীবন তার সাথে ওই সম্পদ থেকে যায়।  

এনএফ