করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা কমে আসায় লকডাউন শিথিল করার কথা ভাবছে দিল্লি রাজ্য সরকার। রোববার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেছেন, দৈনিক সংক্রমণের নিম্নহার অব্যাহত থাকলে আগামী ৩১ মের মধ্যেই লকডাউন তুলে নেওয়া হবে।

রোববার ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কেজরিওয়াল বলেন, ‘গত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ দিল্লির অন্যান্য জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১ হাজার ৬০০ জন; করোনা পজিটিভ শনাক্তের হারও ৩৬ শতাংশ থেকে নেমে এসেছে ২ দশমিক ৫ শতাংশে।’

‘যদি এই ধারা অব্যাহত থাকে, সেক্ষেত্রে আগামী ৩১ মে থেকে লকডাউন তুলে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করবে রাজ্য সরকার।’

ভারতে চলতি বছর মার্চ মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে শুরু হওয়া করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে ভারতের যে রাজ্যগুলো সবচেয়ে বিপর্যয়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তার মধ্যে অন্যতম দিল্লি। এর মধ্যে গত এপ্রিল মাসে সবচেয়ে বাজে সময় পার করেছে রাজ্য। ওই মাসে প্রতিদিন দিল্লিতে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হওয়া রোগীদের শতকরা হার ছিল ৩৬ শতাংশেরও বেশি। দিল্লির স্বাস্থ্যবিভাগ জানিয়েছিল, সেখানে করোনা টেস্ট করাতে আসা প্রতি তিন জন ব্যক্তির একজনই শনাক্ত হচ্ছেন পজিটিভ হিসেবে।

প্রতিদিন ব্যাপকসংখ্যক মানুষ করোনায় আক্রান্ত হওয়ায় মানবিক বিপর্যয় দেখা দেয় দিল্লিতে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে স্থানাভাব ও মেডিকেল অক্সিজেনসহ চিকিৎসা উপকরণের তীব্র সংকট দেখা দেওয়ায় অনেক হাসপাতাল নতুন রোগী ভর্তি করা বন্ধ করে দিয়েছিল।

সংক্রমণে লাগাম টানতে গত ২০ এপ্রিল রাজ্যজুড়ে লকডাউন ঘোষণায় বাধ্য হয় দিল্লির রাজ্য সরকার। প্রথম ও দ্বিতীয় সপ্তাহে দৈনিক সংক্রমণ পরিস্থিতির তেমন উন্নতি দেখা যায়নি, তবে গত দুই সপ্তাহ ধরে সেখানে প্রতিদিনই কমছে দৈনিক আক্রান্তের হার।

অবশ্য সম্প্রতি ভারতজুড়েই নিম্নমূখী হচ্ছে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা বিষয়ক রেখচিত্র। এপ্রিলের মাঝামাঝি মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত যেখানে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের ৪ লাখের কোঠায় উঠেছিল, সেখানে রোববার দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৪০ হাজার ৮৪২ জন। গত এক সপ্তাহ থেকেই ভারতে কমছে করোনায় দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা।

গত ১৬ জানুয়ারি থেকে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু করেছে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্তু টিকার ডোজের ঘাটতি দেখা দেওয়ায় ধীরগতির হয়ে পড়েছে সেই কর্মসূচি।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশজুড়ে এখন পর্যন্ত ৪ কোটি ১৬ লাখ মানুষকে টিকা দেওয়া হয়েছে, যা ভারতের মোট জনসংখ্যার ৩ দশমিক ৮ শতাংশ মাত্র।

সূত্র: রয়টার্স

এসএমডব্লিউ