বলছেন সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী
ইসরায়েলের নেতৃত্ব দেওয়ার “যোগ্য নন” নেতানিয়াহু
টানা ১৪ মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েল। বর্বর সেই আগ্রাসনে নিহত হয়েছেন ৪৫ হাজারেরও বেশি ফিলিস্তিনি।
তবে এরপরও ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে পরাজিত করতে পারেনি দেশটি। এমন অবস্থায় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর তীব্র সমালোচনা করেছেন দেশটির সাবেক এক প্রতিরক্ষামন্ত্রী।
বিজ্ঞাপন
তিনি বলেছেন, ইসরায়েলের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য নেতানিয়াহু “যোগ্য ব্যক্তি নন”। শনিবার (২০ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু “ইহুদি জনগণের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য সঠিক ব্যক্তি নন” বলে শুক্রবার সাবেক ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেনি গ্যান্টজ মন্তব্য করেছেন।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেছেন, “নেতানিয়াহু প্রধানমন্ত্রী আছেন ঠিকই, কিন্তু তিনি ইসরায়েলি সমাজের মতো একটি সম্প্রদায়ের নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য উপযুক্ত নন। ইসরায়েল রাষ্ট্র এবং ইসরায়েলি সমাজ একটি ভিন্ন নেতৃত্ব পাওয়ার যোগ্য।”
মূলত গাজায় ইসরায়েলি বন্দিদের মুক্ত করার জন্য বন্দি বিনিময় চুক্তিতে আলোচনা করতে অস্বীকার করার পাশাপাশি তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগের জন্য নেতানিয়াহু তীব্র সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন। গত কয়েক মাস ধরে গাজায় আটক ইসরায়েলি বন্দিদের পরিবার একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য নেতানিয়াহুর সরকারের ওপর চাপ বাড়িয়েছে।
এমনকি বিরোধী নেতারা এবং বন্দিদের পরিবার নেতানিয়াহুকে ক্ষমতায় নিজের অবস্থান বজায় রাখার জন্য চুক্তিতে বাধা দেওয়ার অভিযোগও তুলেছে।
অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির এবং অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচসহ বেশ কিছু উগ্র ডানপন্থি মন্ত্রী যুদ্ধের অবসানে ঘটিয়ে কোনও চুক্তিতে সম্মত হলে জোট থেকে সরে যাওয়ার এবং সরকারের পতন ঘটানোর হুমকি দিয়েছেন।
এছাড়া নেতানিয়াহু ঘুষ গ্রহহের পাশাপাশি বিশ্বাসভঙ্গের সাথে যুক্ত তিনটি হাই-প্রোফাইল মামলায় দুর্নীতির অভিযোগের মুখোমুখিও হয়েছেন। এই মামলাগুলোতে নেতানিয়াহুর বিচার ২০২০ সালে শুরু হয়েছিল এবং এখনও চলমান রয়েছে।
আরও পড়ুন
যদিও নেতানিয়াহু এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন এবং দাবি করেছেন, তাকে পদ থেকে অপসারণের লক্ষ্যে এটি একটি রাজনৈতিক প্রচারণার অংশ।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
ইসরায়েলের হামলায় গাজায় এখন পর্যন্ত ৪৫ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও লক্ষাধিক মানুষ। জাতিসংঘের মানবাধিকার কার্যালয় জানিয়েছে, নিহতদের অধিকাংশই নারী ও শিশু।
ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
টিএম