আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যেতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করা অভিবাসীদের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে (প্রতীকী ছবি)

অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে উত্তর আফ্রিকার দেশ তিউনিসিয়ার উপকূলে অভিবাসীবোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে। এতে কমপক্ষে ২০ জন মারা গেছেন।

এই ঘটনায় ৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, তিউনিসিয়ার উপকূলরক্ষীরা দেশটির উপকূলে একটি নৌকা ডুবে যাওয়ার পরে আফ্রিকা থেকে আসা ২০ অভিবাসীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে বলে বুধবার দেশটির ন্যাশনাল গার্ড জানিয়েছে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহের মধ্যে তিউনিসিয়ার উপকূলে দ্বিতীয় কোনও অভিবাসীবাহী নৌকাডুবির ঘটনা ঘটল।

এর আগে গত বৃহস্পতিবার নৌকাডুবির ঘটনায় তিউনিসিয়ার উপকূলরক্ষীরা ৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করে। অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপের দিকে যাত্রা করার সময় তাদের নৌকা ডুবে যায় এবং এতে আরও ছয়জন নিখোঁজ হন।

ন্যাশনাল গার্ড জানিয়েছে, বুধবার তিউনিসিয়ার উপকূলরক্ষীরা একই নৌকায় থাকা আরও পাঁচজনকে উদ্ধার করেছে এবং এখনও নিখোঁজদের জন্য অনুসন্ধান অভিযান চলছে। নৌকাটি স্ফ্যাক্স শহরের উপকূলে ডুবে গেছে।

আফ্রিকা থেকে ইউরোপে যেতে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করা অভিবাসীদের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে বেড়েছে। মূলত আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের বহু মানুষ দারিদ্যের জীবন থেকে পালিয়ে ইউরোপে উন্নত জীবনের জন্য ভূমধ্যসাগর পাড়ি দেওয়ার চেষ্টা করেন এবং এ কাজে স্ফ্যাক্সের উপকূলরেখা অভিবাসীদের কাছে প্রধান এক্সিট পয়েন্ট হয়ে উঠেছে।

জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশন (আইওএম)-এর তথ্য অনুসারে, ২০২৩ সালে ২ হাজার ২৭০ জনেরও বেশি অভিবাসী মধ্য ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার চেষ্টা করার সময় মারা গেছে। যা আগের বছরের তুলনায় ৬০ শতাংশ বেশি।

এছাড়া অনিয়মিত অভিবাসন মোকাবিলায় গত বছর ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) তিউনিসিয়ার সাথে একটি চুক্তিও স্বাক্ষর করে।

জাতিসংঘের অভিবাসন বিষয়ক সংস্থার মিসিং মাইগ্রেন্টস প্রোজেক্টের তথ্য অনুসারে, ২০১৪ সাল থেকে ভূমধ্যসাগর অতিক্রম করার চেষ্টায় ২৫ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে বা নিখোঁজ হয়েছে।

আর জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাইকমিশনার ইউএনএইচসিআর’র পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, অবৈধভাবে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ২০২১ সালে ১ লাখ ২৩ হাজারেরও বেশি অভিবাসী ইতালিতে পৌঁছেছেন। ২০২০ সালে এই সংখ্যাটি ছিল ৯৫ হাজারের বেশি।

টিএম