বাংলাদেশে উৎপাদন সরিয়ে আনতে চায় রাশিয়ার বৃহত্তম পোশাক কোম্পানি
রাশিয়ার বৃহত্তম তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক একটি কোম্পানি তাদের কিছু উৎপাদন সক্ষমতা দেশের বাইরে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। দেশটিতে শ্রমিক সংকট দেখা দেওয়ায় কোম্পানিটি তাদের উৎপাদন সক্ষমতা বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা করছে।
রাশিয়ার গ্লোরিয়া জিনস নামের ওই কোম্পানিটি পোশাক ও জুতা তৈরি করে। মঙ্গলবার দেশটির সংবাদমাধ্যম কমারসান্তের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গ্লোরিয়া জিনস তাদের কিছু উৎপাদন সক্ষমতা দেশটিতে বন্ধ করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এরপর সেসব সক্ষমতা দক্ষিণ এশিয়ার একাধিক দেশে সরিয়ে নেওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে গ্লোরিয়া জিনস।
বিজ্ঞাপন
গ্লোরিয়া জিনস এই সিদ্ধান্ত নেওয়ায় কোম্পানিটির রোস্তভ ওব্লাস্টে অবস্থিত কারখানায় এর প্রভাব পড়বে। সালস্কের একটি সেলাই কারখানা ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে এবং সেখানকার কর্মীদের অন্যান্য কারখানায় চাকরির প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
রাশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে গ্লোরিয়া জিনসের অন্তত ১৮টি কারখানা রয়েছে। তবে রোস্তভ ওব্লাস্টে কারখানা বন্ধ করে দেওয়ার বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি দেশটির এই পোশাক কোম্পানি।
রুশ সংবাদমাধ্যম কমারসান্ত বলেছে, গ্লোরিয়া জিনস তাদের উৎপাদন ব্যবস্থা ভিয়েতনাম, বাংলাদেশ কিংবা উজবেকিস্তানে সরিয়ে নেওয়ার কথা বিবেচনা করছে বলে জানা গেছে। উজবেকিস্তানে তুলার চাষ ভালো হওয়ায় কাঁচামালের স্থিতিশীল সরবরাহ রয়েছে। এছাড়া এসব দেশে উন্নত শিল্প স্থাপনা রয়েছে। এর ফলে কারখানায় কাঁচামালের সরবরাহ এবং উৎপাদন খরচ নিয়ে কোনও সমস্যা হয় না।
অতীতে রাশিয়ার বিখ্যাত পোশাক প্রস্তুতকারক বিভিন্ন ব্র্যান্ডের পোশাক উৎপাদনের প্রাথমিক গন্তব্য ছিল চীন। কিন্তু বর্তমানে রুশ ব্র্যান্ডগুলোর কাছে চীনের জনপ্রিয়তা কমে গেছে। কারণ হিসেবে দেশটির ফ্যাশনশিল্পের সঙ্গে জড়িত একজন প্রতিনিধি বিষয়টি ব্যাখ্যা করে বলেন, বাংলাদেশ অথবা উজবেকিস্তানের তুলনায় চীনে শ্রম ব্যয় অনেক বেশি।
রাশিয়ায় পোশাক শিল্প খাতে দক্ষ কর্মীর সংকট দিন দিন আরও প্রকট হচ্ছে। জনবল সংকটের পাশাপাশি রাশিয়ায় তৈরি পোশাকের স্থানীয় কাঁচামাল ও অন্যান্য উপকরণের মান ভালো নয়। ফলে দেশটির কোম্পানিগুলো তাদের পণ্যের উৎস হিসেবে অন্যান্য দেশকে বেছে নিচ্ছে।
এছাড়া পশ্চিমা বিশ্বের একের পর এক নিষেধাজ্ঞার কারণে সেলাইয়ের সরঞ্জাম ও কারখানার অন্যান্য কাঁচামাল কেনার ক্ষেত্রেও অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছে রুশ কোম্পানিগুলো। নিষেধাজ্ঞা থাকায় কারখানার সরঞ্জাম আমদানির অর্থও পরিশোধ করতে পারছে না।
সূত্র: কমারসান্ত।
এসএস