জ্বালানি সংকট আর জেঁকে বসা তীব্র শীতের কারণে ইরানের বিভিন্ন প্রদেশে স্কুল ও সরকারি বিভিন্ন অফিস বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। রোববার দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত গণমাধ্যমের খবরে দেশজুড়ে সরকারি এই নির্দেশনা জারির খবর দেওয়া হয়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জ্বালানি তথ্য প্রশাসনের (ইউএসইআইএ) মতে, বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুদ রয়েছে এনার্জি জায়ান্ট ইরানের। কিন্তু দেশটি বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো পরিচালনার জন্য গ্যাস ও জ্বালানির সংকট তৈরি হওয়ায় গত কয়েক সপ্তাহে বিদ্যুতের রেশন করতে বাধ্য হয়েছে।

ইরানের আধা-সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ বলেছে, শীতল আবহাওয়া ও জ্বালানির ব্যয় নিয়ন্ত্রণের জন্য দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ গিলান, গোলেস্তান, আরদাবিল এবং রাজধানী তেহরানের পশ্চিমাঞ্চলের আলবোর্জে স্কুল ও সরকারি অফিস বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।

আইআরএনএর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রচণ্ড শীতের কারণে তেহরান ও মাজানদারানের উত্তরে, পশ্চিমের কেরমানশাহ, মধ্যাঞ্চলের গাজভিন এবং পূর্বাঞ্চলের দক্ষিণ খোরাসানসহ আরও কয়েকটি প্রদেশে একই ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

গত কয়েক সপ্তাহে দেশটির রাজধানী তেহরানের পাশাপাশি অন্যান্য কয়েকটি প্রদেশে ব্যাপক বিদ্যুৎ বিভ্রাট তৈরি হয়েছে। জ্বালানি সংকটে বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিচালনায় সমস্যা দেখা দেওয়ায় নিয়মিত বিদ্যুৎ বিভ্রাটের মুখোমুখি হয়েছেন দেশটির বাসিন্দারা। যে কারণে সরকার-বিরোধী তীব্র ক্ষোভও তৈরি হয়েছে অনেকের মাঝে।

এর আগে, গত বৃহস্পতিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান নাগরিকদের বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য হিটিং মেশিন প্রয়োজনের তুলনায় ‘‘দুই ডিগ্রি কমে’’ রেখে ব্যবহার করার আহ্বান জানান। দেশটির সরকার ইতোমধ্যে এই বিষয়ে নাগরিকদের মাঝে সচেতনতা তৈরির জন্য ব্যাপক প্রচার শুরু করেছে।

ইউএসইআইএর তথ্য অনুযায়ী, ২০২২ সালে বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম অপরিশোধিত তেল উৎপাদনকারী দেশ নির্বাচিত হয়েছিল ইরান। বর্তমানে ভেনেজুয়েলা এবং সৌদি আরবের পর তৃতীয় বৃহত্তম অপরিশোধিত তেলের মজুদ রয়েছে ইরানে। কিন্তু একের পর এক পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞার কারণে অবকাঠামো বিনিয়োগের খরায় ভুগছে ইরানের বিদ্যুৎ গ্রিড।

গত জুলাইয়ে তীব্র তাপপ্রবাহের মাঝামাঝি সময়ে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য দেশটির সরকারি সব প্রতিষ্ঠানের কর্ম ঘণ্টা কমিয়ে অর্ধেক করা হয়েছিল।

সূত্র: এএফপি।

এসএস