সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদের কবরে আগুন দিয়েছেন দেশটির বিদ্রোহীরা। বুধবার দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় লাতাকিয়া প্রদেশের কারদাহায় অবস্থিত আসাদের বাবার কবরে আগুন দেন তারা।

ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপির ধারণ করা ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বিদ্রোহী যোদ্ধারা হাফিজ আল-আসাদের কবরে আগুন ধরিয়ে দিচ্ছেন। এ সময় বিদ্রোহীদের কয়েকজন সেখানে পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে কবর পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য দেখেন।

যুক্তরাজ্য-ভিত্তিক সিরীয় মানবাধিকার সংস্থা সিরিয়ান অবজারভেটরি ফর হিউম্যান রাইটস এএফপিকে বলেছে, ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদের আলাউইত সম্প্রদায় অধ্যুষিত লাতাকিয়া প্রদেশের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত হাফিজ আল-আসাদের কবরে আগুন দিয়েছেন বিদ্রোহীরা।

ভিডিওতে দেখা যায়, কারদাহায় হাফিজের কবরে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিচ্ছেন ক্ষুব্ধ বিদ্রোহী যোদ্ধারা। এছাড়া তাদের ধরিয়ে দেওয়া আগুনে কবরস্থানের অন্যান্য স্থাপনাও পুড়ে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত হয়। আসাদের বাবা ২০১২ সালে মারা যান। তাকে লাতাকিয়ার কারদাহাতে পরিবারের পৈতৃক সমাধিতে দাফন করা হয়।

বাশার আল-আসাদের বাবা হাফিজ আল-আসাদ ১৯৭১ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত সিরিয়ার ক্ষমতায় ছিলেন। তার মৃত্যুর পর সিরিয়ার ক্ষমতার মসনদে বসেন বাশার আল-আসাদ। ক্ষমতার প্রথম দিকে দেশটিতে ব্যাপক সংস্কারের পথে এগোলেও পরবর্তীতে বাবার মতোই কর্তৃত্ববাদী শাসকে পরিণত হন। যা তাকে শেষ পর্যন্ত দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে।

হাফিজ আল-আসাদের কবর বিশাল উঁচু কাঠামোর নিচে অবস্থিত। জটিল স্থাপত্য নকশায় তৈরি এই কবরের বাইরের অংশ পাথরে খোদাই করা। সেখানে বাশার আল-আসাদের ভাই বাসেলসহ আসাদ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদেরও কবর রয়েছে। ১৯৯৪ সালে এক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার আগে বাশারের এই ভাইকে তার বাবার মসনদের উত্তরাধিকারী হিসেবে মনে করা হতো।

এর আগে, গত রোববার সিরিয়ার ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামের (এইচটিএস) নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীদের বিদ্যুৎগতির অভিযানের মুখে দামেস্কের পতন ঘটে। মাত্র দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের অভিযানে দেশটির একের পর এক শহরের দখল নেয় বিদ্রোহীরা।

ওই দিন সকালের দিকে প্রাণ বাঁচাতে রাশিয়ায় পালিয়ে যেতে বাধ্য হন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এর মধ্য দিয়ে সিরিয়ায় আসাদ পরিবারের ৫০ বছরেরও বেশি সময়ের শাসনের অবসান ঘটে।

সূত্র: এএফপি।

এসএস