আকস্মিক সামরিক আইন জারি ও প্রত্যাহার ঘিরে নাটকীয়তার ঘটনায় দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের কার্যালয়ে অভিযান পরিচালনার চেষ্টা করেছে পুলিশ। বুধবার দক্ষিণ কোরিয়ার পুলিশের কয়েক ডজন সদস্য প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে অভিযান চালাতে যান। তবে তারা প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের মূল ভবনে প্রবেশ করতে পারেননি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ মিত্র দক্ষিণ কোরিয়ায় সামরিক আইন জারির ঘটনা তদন্তে পুলিশ প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে অভিযান চালাতে যায় বলে দেশটির সংবাদমাধ্যম ইয়োনহাপ জানিয়েছে।

এর আগে, গত ৩ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ায় অনেকটা আকস্মিকভাবে সামরিক আইন জারি করেন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইউল। পরে দেশটিতে ব্যাপক প্রতিবাদের মুখে ছয় ঘণ্টা পর সেই সামরিক আইন বাতিলের ঘোষণা দেন তিনি। এই ঘটনায় ইতোমধ্যে আদালতের নির্দেশে পুলিশ ও অন্যান্য সংস্থা তদন্ত শুরু করেছে। প্রেসিডেন্ট ইউনসহ পুলিশ ও সামরিক বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তারাও তদন্তের আওতায় আসছেন।

ইউনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে ফৌজদারি তদন্ত শুরু হয়েছে। একই সঙ্গে তার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞাও জারি করা হয়েছে। যদিও দেশটির সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তাকে গ্রেপ্তার কিংবা জিজ্ঞাসাবাদ করেনি।

বুধবার সকালের দিকে প্রেসিডেন্ট ইউনের নিরাপত্তা পরিষেবার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ইউনের কার্যালয়ে পুলিশ অভিযান চলছে। পরে দেশটির রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম ইয়োনহাপ জানায়, প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ে তল্লাশি চালাতে যাওয়া তদন্তকারী কর্মকর্তারা এখনও মূল ভবনে প্রবেশ করতে পারেননি।

ইয়োনহাপের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দা সংস্থা সিক্রেট সার্ভিসের তল্লাশি অভিযানের প্রক্রিয়ার সঙ্গে একমত হতে পারেনি পুলিশ। তবে এই অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ কোনও মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।

প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, ‘‘আমরা আইন ও অতীতের বিভিন্ন ঘটনার ওপর ভিত্তি করে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি।’’ তবে প্রেসিডেন্টের কার্যালয় থেকে তল্লাশি অভিযানে বাধা দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন তিনি।

এদিকে, দেশটির সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন, ইউনের ঘনিষ্ঠ আস্থাভাজন ও জাতীয় পুলিশ প্রধানসহ জ্যেষ্ঠ দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে কারাগারে নিজের একটি শার্ট ও অন্তর্বাস ব্যবহার করে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন কিম।

দেশটির একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী কিম ইয়ং-হিউন বর্তমানে পর্যবেক্ষণে আছেন। তবে তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস