শুক্রবার জুমার নামাজের পর আল-আকসা মসজিদে ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনীর হামলা

গাজায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে ফের ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা করেছে ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী। শুক্রবার (২১ মে) জুমার নামাজের পর ফিলিস্তিনি মুসল্লিদের ওপর হামলার এই ঘটনা ঘটে। আর এরপরই এই হামলার জবাবে ইসরায়েলকে ভণ্ড ও কপট রাষ্ট্র উল্লেখ করে তুরস্ক জানিয়েছে, ইহুদি এই রাষ্ট্রটি তাদের ভণ্ড ও কপটাচারী চরিত্র প্রদর্শন অব্যাহত রেখেছে।

শুক্রবার টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, ‘গাজায় যুদ্ধবিরতি, অন্যদিকে জেরুজালেমে হামলা! ইসরায়েলের ভণ্ড ও কপটাচারী চরিত্রের প্রদর্শন চলছেই। মানুষের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ইবাদতের স্বাধীনতা হরণকারী এই বর্বরতা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে।’

গাজায় হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পর প্রথম জুমায় অধিকৃত পূর্ব জেরুজালেমের পবিত্র আল-আকসা মসজিদে হামলা চালিয়ে নামাজে অংশ নেওয়া কয়েক ডজন ফিলিস্তিনিকে আহত করে ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনী। ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে কাঁদানে গ্যাস, বিকট শব্দ উৎপন্নকারী স্টান গ্রেনেড, ধোঁয়া বোমা ও সরাসরি গুলি চালায় তারা। পরে ফিলিস্তিনিরা পাল্টা প্রতিরোধ করতে শুরু করলে সেখানে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।

ফিলিস্তিনি রেড ক্রিসেন্ট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইসরায়েলের নিরাপত্তা বাহিনীর হামলায় প্রায় ২০ জন ফিলিস্তিনি আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে দু’জনকে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে নেওয়া হয়।

প্রত্যক্ষদর্শীরা আল-জাজিরাকে জানান, শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে অনেক ফিলিস্তিনি হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে হওয়া যুদ্ধবিরতি উদযাপনে মসজিদ প্রাঙ্গণে সমবেত হলে সেখানে সংঘর্ষ বাধে। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে ফিলিস্তিনিদের ছত্রভঙ্গ করতে শুরু করে ইসরায়েলি পুলিশ।

পূর্ব জেরুজালেম থেকে আল-জাজিরার প্রতিনিধি ইমরান খান জানান, ‘নামাজ শেষে ফিলিস্তিনিরা যুদ্ধবিরতি উদযাপনে গান গাচ্ছিলেন এবং স্লোগান দিচ্ছিলেন। এসময় পাশে থাকা ইসরায়েলি পুলিশ মসজিদ প্রাঙ্গণে আসে এবং সবাইকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করে; তারা সবসময় এটা করে আসছে। পুলিশ ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে এ সময় স্টান গ্রেনেড, ধোঁয়া বোমা ও কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে শুরু করলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।’

টানা ১১ দিন যুদ্ধের পর গত শুক্রবার ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাস ও ইসরায়েলের মধ্যে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়েছে। শুক্রবার স্থানীয় সময় রাত ২টায় এই যুদ্ধবিরতি কার্যকর হয়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ১১ দিনের এই ইসরায়েলি হামলায় গাজা ভূখণ্ডে ২৩২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে শতাধিক নারী ও শিশু রয়েছেন।

অন্যদিকে ইসরায়েলের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ জানিয়েছে, হামাসের রকেট হামলায় ১২ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে দুইজন শিশুও রয়েছে। এছাড়া ১১ দিনের এই যুদ্ধে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলের দিকে প্রায় চার হাজার রকেট নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছে তেল আবিব।

সূত্র: ইয়েনি শাফাক

টিএম