সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ মস্কোতে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন কি না, তা নিশ্চিত করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে ক্রেমলিন। পাশাপাশি মস্কো বলেছে, সিরিয়া বিদ্রোহীদের দখলে যাওয়ার ঘটনায় হতবাক রাশিয়া।

সোমবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ক্রেমলিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেশকভ বলেছেন, বাশার আল-আসাদ কোথায় আছেন, সেই বিষয়ে আপনাদের বলার মতো আমার কাছে কিছু নেই।

এর আগে, রোববার ক্রেমলিনের একটি সূত্র রুশ সংবাদমাধ্যমগুলোকে জানায়, ইসলামপন্থী বিদ্রোহীরা দামেস্কে প্রবেশের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর আসাদ ও তার পরিবার মস্কোতে পৌঁছান। আসাদের ছেলে রাশিয়ার রাজধানীতে পড়াশোনা করেন।

পেসকভ বলেছেন, রাশিয়া যদি আসাদ ও তার পরিবারকে আশ্রয় দেয়, তাহলে সেটি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সিদ্ধান্ত। অবশ্যই এই জাতীয় সিদ্ধান্ত রাষ্ট্রপ্রধান ছাড়া নেওয়া যায় না এবং এটি তার সিদ্ধান্ত।

তিনি বলেন, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিনের কার্যতালিকায় আসাদের সঙ্গে কোনও বৈঠক ছিল না। ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট ভিক্টর ইয়ানুকোভিচসহ বিশ্বের বেশ কয়েকজন ক্ষমতাচ্যুত রাষ্ট্রনেতাকে আশ্রয় দিয়েছে রাশিয়া।

সিরিয়ার গত কয়েকদিনের নাটকীয় ঘটনা নিয়ে সংক্ষিপ্ত মন্তব্যে পেসকভ বলেছেন, সিরিয়া পরিস্থিতি ক্রেমলিনকে অবাক করে দিয়েছে। তিনি বলেন, সিরিয়ায় যা ঘটেছে তা পুরো বিশ্বকে অবাক করেছে এবং এক্ষেত্রে আমরাও ব্যতিক্রম নই।

সিরিয়ায় রাশিয়ার কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ সেনা ও নৌ ঘাঁটি রয়েছে। দেশটিতে ২০১৫ সালে বাশার আল-আসাদের পক্ষে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া।

পেশকভ বলেন, অস্থিতিশীলতার কারণে সিরিয়াকে এখন অত্যন্ত কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যেতে হবে। সিরিয়ায় অবস্থিত রাশিয়ার সব সামরিক ঘাঁটির কী হবে, সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এই বিষয়ে এখনই মন্তব্য করাটা আগাম হয়ে যাবে। সিরিয়ায় যারা ক্ষমতায় থাকবেন, তাদের সঙ্গে আলোচনার বিষয় এটি।

ক্রেমলিনের এই মুখপাত্র বলেন, সিরিয়ায় রাশিয়ার ঘাঁটিগুলোর নিরাপত্তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘‘যারা নিরাপত্তা দিতে পারেন, তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য আমরা সম্ভাব্য এবং প্রয়োজনীয় সবকিছু করছি। আর আমাদের সামরিক বাহিনীও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করছে।’’

রোববার ক্রেমলিনের সূত্রের বরাত দিয়ে রাশিয়ার বার্তা সংস্থাগুলো বলেছিল, আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করা বিদ্রোহীরা সিরিয়ার ভূখণ্ডে রাশিয়ার সেনা ঘাঁটি এবং কূটনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিরাপত্তার নিশ্চয়তা দিয়েছেন।

এদিকে, সোমবার মস্কোতে অবস্থিত সিরিয়ার দূতাবাস ভবনে বিদ্রোহীদের পতাকা উত্তোলন করা হয়েছে। দূতাবাসের কার্যক্রম স্বাভাবিক আছে বলে একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন।

আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার আন্দোলনে অংশ নেওয়া সিরিয়ার কয়েকটি বিদ্রোহী গোষ্ঠীর প্রতি তুরস্কের সমর্থন রয়েছে। পেশকভ বলেছেন, তুরস্কের সঙ্গে ‘‘সংলাপ’’ করেছে রাশিয়া। এখানে সব দেশের সংলাপ চালিয়ে যাওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। আমরা দৃঢ়ভাবে এটি চালিয়ে যেতে এবং পরিস্থিতি বিশ্লেষণে আগ্রহী।

সূত্র: এএফপি।

এসএস