প্লাস্টিক দূষণ কমানো নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে আলোচনায় বসেছিলেন ২০০টি দেশের প্রতিনিধি। তারা প্লাস্টিক দূষণ কমানো নিয়ে একটি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাইছিলেন। কারণ বিশ্বজুড়ে প্লাস্টিক দূষণ এক ভয়াবহ জায়গায় পৌঁছেছে।

কিন্তু অনেক আলোচনার পরেও সেই সিদ্ধান্তে পৌঁছানো গেল না। জাতিসংঘের এক বিশেষ সংস্থা এই বৈঠকের আয়োজন করেছিল। এর আগেও তারা এবিষয়ে বৈঠকের আয়োজন করেছে।

বুসানের বৈঠক চূড়ান্ত বৈঠক হিসেবে স্থির হয়েছিল। মনে করা হয়েছিল, সমস্ত রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে একটি অভিন্ন কর্মসূচি এবং প্রস্তাব গ্রহণ করা যাবে। কিন্তু কোনোভাবেই সহমতে পৌঁছানো যায়নি। সাতদিন ধরে বৈঠক চলার পরেও সকলে একমত হতে পারেননি।

বিশেষজ্ঞেরা জানিয়েছেন, বহু আলোচনা এবং দীর্ঘ টালবাহানার পর রোববার পানামা একটি প্রস্তাব দিয়েছিল। ১০০টিরও বেশি দেশ পানামাকে সমর্থন করেছিল। সেখানে বলা হয়েছিল, ক্রমান্বয়ে প্লাস্টিকের উৎপাদন বন্ধ করার জন্য একটি রাস্তা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই প্রস্তাবেও সকলে সহমত হতে পারেনি। প্লাস্টিকের উৎপাদন কমানোর ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলো সহমত হয়নি। প্লাস্টিক দূষণের বিষয়টি মাথায় রাখলেও উন্নয়নের ক্ষেত্রে প্লাস্টিকের প্রয়োজনের কথাটি তারা তুলে ধরে।

শেষ পর্যন্ত স্থির হয়, আরও আলোচনার জন্য সময় দেওয়া হবে। জাতিসংঘের পক্ষ থেকে জানানো হয়, বৈঠকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। কিন্তু নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে আরও সময় দিতে হবে। কারণ, চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু বিষয় অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছে।

ডব্লিউডব্লিউএফ-এর বিশেষজ্ঞ এরিক লিনডেবজার্গ জানিয়েছেন, “প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করার জন্য কী করতে হবে আমরা সবাই জানি। ফলে এনিয়ে আরও আলোচনা করার কোনও অর্থ হয় না। যা করার তা এখনই করা প্রয়োজন।”

রোববার বৈঠকের অন্তিম দিনে বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। উল্লেখ্য, সেই সম্মেলনে যোগ দেয়নি যুক্তরাষ্ট্র এবং চীন। বৈঠকে বলা হয়, যে দেশগুলো তেল উৎপাদন করে, তারা প্লাস্টিক উৎপাদন বন্ধের ক্ষেত্রে সহমত হচ্ছে না। নাম না করলেও বিশেষজ্ঞদের ধারণা রাশিয়া এবং সৌদি আরবকে উদ্দেশ্য করেই একথা বলা হয়েছে।

অন্যদিকে সমীক্ষায় উঠে এসেছে, প্লাস্টিক উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম পাঁচটি নাম হলো- ভারত, আমেরিকা, চীন, সৌদি আরব এবং দক্ষিণ কোরিয়া। প্লাস্টিক উৎপাদন বন্ধ করা নিয়ে ভারতের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়।

এদিকে বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, প্লাস্টিক একইসঙ্গে পরিবেশ এবং শরীরের ক্ষতি করছে। পরিবেশ থেকে ছড়িয়ে পড়ছে মাইক্রো প্লাস্টিক। যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করছে। এর ফলে মারণ রোগ হচ্ছে।

প্লাস্টিক দূষণ এখনই বন্ধ করতে না পারলে এই ধরনের রোগের সংখ্যা আরও বহুগুণ বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।

টিএম