কর্মী সাজিয়ে মানবপাচার, ইতালিতে আটকে গেল ৩ হাজারের বেশি আবেদন
ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাইরের দেশগুলো থেকে বিভিন্ন পেশায় কর্মী আনার নাম দিয়ে অভিবাসী পাচারে জড়িত চক্রগুলোর মাধ্যমে আসা তিন হাজার ৩৩৯টি আবেদন আটকে দিয়েছে ইতালি।
দেশটির পুলিশ বিভাগ বৃহস্পতিবার বলেছে, অভিবাসী পাচারে জড়িতদের বিরুদ্ধে তাদের তদন্ত চলমান আছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরের দেশগুলো থেকে বিভিন্ন ব্যক্তিদের কর্মী সাজিয়ে মানবপাচারের সঙ্গে যুক্ত এই চক্রগুলো। তদন্তের ধারাবাহিকতায় তিন হাজারের বেশি ভুয়া আবদেন আটকে দেওয়া হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
ক্যারাবিনিয়ারি এবং গার্দিয়া দি ফিনানজা এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, ‘‘কৃষি, নির্মাণ এবং পরিচর্যা খাতে শূন্য পদ পূরণে কর্মী আনতে তিন হাজার ৩৩৯টি আবেদন জমা দিয়েছে ইতালির ১৪২টি কোম্পানি। এই আবেদনগুলোর মাধ্যমে কর্মী সাজিয়ে মানবপাচার করাই ছিল তাদের উদ্দেশ্য।
দেশটির দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর সালেরনোর মাফিয়া বিরোধী প্রসিকিউটরদের একটি তদন্তে দেখা গেছে, কর্মী নিয়োগকারী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহার করছে স্থানীয় ও সংঘবদ্ধ অপরাধ চক্র। তদন্তকারী কর্মকর্তারা এ বছরের জুলাইয়ে সেখানে অভিযান চালিয়ে নগদ ১০ লাখ ইউরোর বেশি অর্থ উদ্ধার করেছিল। ধারণা করা হচ্ছে, এই অর্থ অভিবাসী পাচার কাজে ব্যবহারের জন্যই রাখা হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ইতালির ২৯টি প্রদেশকে নতুন করে কর্মী নিয়োগের অনুমতি না দেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আর যেসব আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে সেগুলো বাতিল করারও পরামর্শ দিয়েছে পুলিশ বিভাগ।
অনিয়মিত অভিবাসন ও মানবপাচার নিয়ন্ত্রণে বেশ কঠোর অবস্থানে রয়েছে ইতালি। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও পিয়ান্তেদোসি অক্টোবরে বলেছেন, অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণ এবং অভিবাসী পাচার ঠেকাতে জি-৭ ভুক্ত দেশগুলো সম্মিলিতভাবে একটি বিশেষ পুলিশ ইউনিট গঠন করবে।
প্রধানমন্ত্রী জর্জা মেলোনির ডানপন্থি সরকার বর্তমানে জি-৭ জোটের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করছে। মানবপাচার ঠেকাতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও আফ্রিকার সরকারগুলোরও সহযোগিতা চেয়েছে ইতালি।
আশ্রয়প্রার্থীদের তৃতীয় দেশে রেখে আবেদন যাচাই-বাছাইয়ের জন্য আলবেনিয়ার সরকারের সঙ্গে ২০২৩ সালের শেষ দিকে একটি চুক্তি করে মেলোনির সরকার। সেই চুক্তি অনুযায়ী আলবেনিয়ায় নির্মাণ করা হয়েছে আশ্রয়কেন্দ্র। ভূমধ্যসাগর থেকে উদ্ধার করা পুরুষ অভিবাসীদের সরাসরি আলবেনিয়ার আশ্রয়কেন্দ্রে রেখে তাদের আশ্রয় আবেদন প্রক্রিয়া করতে চেয়েছিল ইতালি।
সরকারের দাবি, এর মাধ্যমে অনিয়মিত অভিবাসন ও মানবপাচারকে অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। কিন্তু আদালতের সিদ্ধান্তে পরিকল্পনাটি এখনও বাস্তবায়ন করতে পারেনি জর্জিয়া মেলোনির সরকার।
এসএস