ইন্দোনেশিয়ার উপকূলে নৌকাডুবির এক ঘটনার পর নারী ও শিশুসহ শতাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর। শনিবার ইউএনএইচসিআরের কর্মকর্তা ফয়সাল রহমান ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপিকে এই তথ্য জানিয়েছেন।

বৌদ্ধ-সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমারে নিপীড়নের শিকার সংখ্যালঘু রোহিঙ্গারা প্রায়ই নৌকায় চেপে মিয়ানমার এবং বাংলাদেশ থেকে সমুদ্রপথে ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ডসহ এই অঞ্চলের অন্যান্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

ফয়সাল রহমান বলেছেন, আমরা ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব আচেহ সরকারের কাছ থেকে মোট ১১৬ জন রোহিঙ্গা শরণার্থীকে উদ্ধারের বিষয়ে তথ্য পেয়েছি। এই শরণার্থীরা এখনও সমুদ্র সৈকতে রয়েছেন। উদ্ধারের পর এই সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের কোথায় নেওয়া হবে সেই বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি বলে জানিয়েছেন তিনি।

ইউএনএইচসিআরের এই কর্মকর্তা বলেছেন, উত্তর-পূর্ব সুমাত্রা দ্বীপের উপকূলে রোহিঙ্গাদের বহনকারী কাঠের নৌকাটি অর্ধ-নিমজ্জিত অবস্থায় পাওয়া গেছে। স্থানীয় জেলে সাইফুদ্দিন তাহের বলেন, শনিবার সকালে নৌকাটিকে প্রথমে পূর্ব আচেহর জলসীমায় প্রবেশ করতে দেখা যায়। এর কয়েক ঘণ্টা পর নৌকাটি প্রায় ডুবে যায়।

তিনি বলেন, নৌকাটি সব যাত্রীকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। তবে তাদের মধ্যে একজন অসুস্থ রয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। নৌকাটি সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে পানিতে প্রায় তলিয়ে গেছে। শরণার্থীরা নিরাপদে তীরে ফিরেছেন।

সাধারণত নভেম্বর থেকে এপ্রিলের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় রোহিঙ্গাদের পৌঁছানোর প্রবণতা বৃদ্ধি পায়। কারণ ওই সময় সমুদ্র তুলনামূলক শান্ত থাকায় রোহিঙ্গারা নৌকায় করে প্রতিবেশী থাইল্যান্ড এবং মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ ইন্দোনেশিয়া ও মালয়েশিয়ায় যান।

সম্প্রতি ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে রোহিঙ্গাবিরোধী মনোভাব তীব্র আকার ধারণ করেছে। রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের দাবিতে দেশটিতে বিভিন্ন সময়ে বিক্ষোভও করেছেন সাধারণ মানুষ। গত মাসে দক্ষিণ আচেহ জেলার উপকূলে একটি নৌকায় প্রায় ১৫২ জন রোহিঙ্গা শরণার্থী কয়েকদিন ধরে ভাসছিলেন। পরে তাদের উদ্ধার করে দেশটির আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

ইন্দোনেশিয়া ১৯৫১ সালের জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক কনভেনশনে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তবে দেশটিতে শরণার্থীরা পৌঁছালে তাদের আশ্রয় দেওয়ার ইতিহাস রয়েছে।

সূত্র: এএফপি।

এসএস