ইসলামাবাদের ডি-চকের দখল নিতে কেন মরিয়া পিটিআই?
পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তি ও সরকারের পদত্যাগ দাবিতে রাজধানী ইসলামাবাদের ডি-চকের আশপাশে জড়ো হচ্ছেন পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) কর্মী ও সমর্থকরা। আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে গুলি সত্ত্বেও পাকিস্তানের প্রশাসনিক কেন্দ্র খ্যাত ডি-চকের দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন দলটির নেতাকর্মীরা।
মঙ্গলবার সকালের দিকে পিটিআইয়ের হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক ইসলামাবাদের প্রাণকেন্দ্র ডি-চকে পৌঁছানোর চেষ্টা করেন। এর মধ্যে কিছুসংখ্যক কর্মী সমর্থক পাকিস্তানের অত্যন্ত সুরক্ষিত ও স্পর্শকাতর এই এলাকায় পৌঁছালেও পাক রেঞ্জার্সের সদস্যদের স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র থেকে ছোড়া গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেলে সেখানে টিকতে পারেননি। পরে মুহূর্তের মধ্যেই ফাঁকা হয়ে যায় এলাকাটি।
বিজ্ঞাপন
কাতার-ভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরার পাকিস্তান প্রতিনিধি বলেছেন, নিরাপত্তাবাহিনীর তীব্র গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেলের ব্যবহারে কিছু বিক্ষোভকারীরা পিছু হটলেও পরবর্তীতে আবারও ডি-চকে ফিরেছেন। ইসলামাবাদে চরম উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
পাকিস্তানের ইংরেজি দৈনিক ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডি-চকের চারপাশ ঘিরে নিরাপত্তা বাহিনীর তৈরি করা প্রতিবন্ধকতা এড়িয়ে সেখানে পৌঁছেছেন কিছু বিক্ষোভকারী। বিক্ষোভকারীদের বাধা দিতে সড়ক-মহাসড়কে বিশাল আকারের কনটেইনারের প্রাচীর তৈরি করা হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা এসব কনটেইনারের ওপরে উঠে পড়েছেন। এ সময় পাক রেঞ্জার্সের সদস্যদের বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে তাজা গুলি ছুড়তে দেখা গেছে। তবে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কোনও ধরনের সংঘাতে জড়ানো থেকে বিরত রয়েছেন।
• ডি-চক আসলে কী?
খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা আলী আমিন গান্দাপুর পিটিআইয়ের দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত কর্মী-সমর্থকদের ডি-চকে অবস্থান কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়েছেন।
ইসলামাবাদের অত্যন্ত সুরক্ষিত রেড জোনের একটি এই ডি-চক। পাকিস্তানের রাজনৈতিক প্রতিবাদ-বিক্ষোভের অন্যতম তীর্থস্থান হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে এই গোলচত্বরকে।
ডি-চক এলাকায় দেশটির সরকারের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ভবন রয়েছে। এর মধ্যে দেশটির সংসদ ভবন, প্রেসিডেন্টের কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, সুপ্রিম কোর্ট, জাতীয় পরিষদ ভবন ও বিভিন্ন দেশের দূতাবাস এবং হাইকমিশন রয়েছে।
ইসলামাবাদের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ডি-চককে দেশটিতে অনেকেই ‘‘ডেমোক্রেসি চক’’ নামেও বর্ণনা করে থাকেন। স্থানটি দীর্ঘদিন ধরে প্রতিবাদের প্রধান চত্বর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ২০১৪ সালে ইমরান খানের রাজনৈতিক দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) ওই স্থানটিতে প্রায় এক মাস ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছিল।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আসা ভিডিওতে দেখা যায়, বিক্ষোভকারীরা ডি-চক থেকে প্রায় ৫৫০ মিটার দূরে জড়ো হচ্ছেন; যেখানে তিন স্তরের কনটেইনারের স্তূপ করে রাখা হয়েছে।
ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবির নেতৃত্বে কর্মী-সমর্থকের বিশাল একটি বহর এখনও ইসলামাবাদ থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে রয়েছে। কর্তৃপক্ষের কঠোর প্রতিক্রিয়ার কারণে এই বহরের ইসলামাবাদ অভিমুখী গতি কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এসএস