দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের দেশ সার্বিয়ার পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে সরকারদলীয় আইনপ্রণেতাদের হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে। চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটির একটি রেলওয়ে স্টেশনের ছাদ ধসে ১৫ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘিরে সোমবার পার্লামেন্টে বিরোধীদের প্রতিবাদের সময় এই ঘটনা ঘটে।

ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সার্বিয়ার পার্লামেন্টে বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা ক্ষমতাসীন জোটের বিরুদ্ধে স্টেশনের ছাদ ধসের ঘটনায় দায় এড়ানোর চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ তুলেছে। এই অভিযোগে সোমবার পার্লামেন্টের অধিবেশন চলাকালীন বিরোধী আইনপ্রণেতারা ব্যানার নিয়ে প্রতিবাদ জানান। এ সময় ক্ষমতাসীন জোটের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা শুরু হয়। শেষ পর্যন্ত তা হাতাহাতিতে গড়ায়।

পার্লামেন্টের বিরোধীদল গ্রিন-লেফট ফ্রন্টের আইনপ্রণেতা রাডোমির লাজোভিচ স্পিকারের সামনে গিয়ে ‘‘আপনার হাতে রক্ত ​লেগে ​আছে’’ লেখা একটি ছবি প্রদর্শন করেন। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনওয়ান টেলিভিশনের প্রচারিত ভিডিও ফুটেজে এই দৃশ্য দেখা যায়।

এ সময় দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জ্যাটিবোর লোনকার তার কাছে গিয়ে তর্ক শুরু করেন। তখন পার্লামেন্টের অন্যান্য আইনপ্রণেতারা স্পিকারের সামনে গিয়ে চিৎকার করেন এবং  টেনে-হিঁচড়ে একে অপরকে মারধর করতে শুরু করেন। বিরোধীদলীয় আইনপ্রণেতারা সরকারি দলের আইনপ্রণেতাদের ‘‘খুনি, খুনি’’ বলে স্লোগান দেন।

এর এক পর্যায়ে কেউ কেউ দেশটির প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিকের রক্তে রাঙানো লাল হাতের ছবি ওপরে তুলে ধরে বলেন, ‘‘তিনি ব্যতীত আর কেউ দোষী নন।’’

চলতি মাসের শুরুর দিকে দেশটির নোভি স্যাড এলাকার একটি ট্রেন স্টেশনের ছাদ ধসে অন্তত ১৫ জনের প্রাণহানি ঘটে। এই ঘটনা ঘিরে ভুসিক ও তার ক্ষমতাসীন দলের তীব্র সমালোচনা শুরু হয়েছে। দেশটির বিরোধী দলীয় রাজনীতিক ও সাধারণ নাগরিকদের অনেকেই স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির দায়ে ভুসিককে অভিযুক্ত করছেন। যদিও দেশটির প্রেসিডেন্ট ও ক্ষমতাসীন জোটের রাজনীতিকরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

গত সপ্তাহের এই দুর্ঘটনায় দেশটির একজন সাবেক মন্ত্রীসহ অন্তত ১২ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও দেশটির সরকার বিরোধী ও জনগণের চাপ সামলাতে ব্যর্থ হচ্ছে। সার্বিয়ার বিরোধী দলগুলো বলছে, সম্ভাব্য অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষ কালক্ষেপণ করেছে।

সূত্র: রয়টার্স।

এসএস