বাংলাদেশির কাছ থেকে ৪২ টাকায় কেনা কলায় শিল্পকর্ম বিক্রি ৭২ কোটিতে
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে রুপার চূর্ণে রাঙানো টেপ দিয়ে দেয়ালে আটকানো একটি পাকা কলা বিক্রি হয়েছে ৬০ লাখ ২০ হাজার ডলারে। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৭২ কোটি ২৫ লাখ ৭৭ হাজার টাকা। এটি একটি শিল্পকর্ম।
আর এই শিল্পকর্মের জন্য যে কলাটি ব্যবহার করা হয়েছে, সেটি কেনা হয়েছিল নিউইয়র্কের ম্যানহাটন শহরের এক বাংলাদেশি ফলবিক্রেতার কাছ থেকে; মাত্র ৩৫ সেন্টে (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৪২ টাকা)। ম্যানহাটনের আপার ইস্ট সাইড এলাকায় নিজের ফলের দোকান চালান ওই বিক্রেতা।
বিজ্ঞাপন
নিজের নাম প্রকাশ করেননি ওই বাংলাদেশি। মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য নিউইয়র্ক টাইমস তাকে জিজ্ঞেস করেছিল— যে কলা তিনি ৩৫ সেন্টে বিক্রি করেছেন; সেটি যে ৬০ লাখেরও বেশি ডলারে বিক্রি হয়েছে—তা তিনি জানেন কি না। উত্তরে ওই বাংলাদেশি বলেছেন, তিনি এ সংবাদ জানেন না।
সম্প্রতি নিজেদের ওয়েবসাইটে শিল্পকর্ম হিসেবে দেওয়ালে টেপ দিয়ে সাঁটানো একটি পাকা কলার ছবি পোস্ট করে নিউইয়র্কভিত্তিক নিলাম সংস্থা সোথবি। মূলত নিলামে তোলার জন্যই এই ছবিটি পোস্ট করা হয়েছিল। ‘কমেডিয়ান’ নামের এই শিল্পকর্মটি তৈরি করেছেন ইতালীয় শিল্পী মাউরিজিও ক্যাত্তেলান। ছবিটি আপলোড করার পর সোথবির প্রত্যাশা ছিল, ‘কমেডিয়ান’ অন্তত ১০ লাখ ডলারে বিক্রি হবে।
গত ১৮ তারিখ নিজেদের ওয়েবসাইটে ‘কমেডিয়ান’-এর ছবি আপলোড করেছিল সোথবি। ছবি আপলোডের তিন দিনের মধ্যে সেটি কিনে নিয়েছেন ট্রন নামের একটি ক্রিপ্টোকারেন্সির উদ্ভাবক এবং চীনা বংশোদ্ভূত আমেরিকান জাস্টিন সান।
তবে এ ধরনের শিল্পকর্ম যে এবারই প্রথম নিলামে উঠল—এমন নয়। ২০১৯ সালে প্রথম আর্ট ব্যাসেল মিয়ামি বিচ ফেয়ারে এক প্রদর্শনীতে কলা দিয়ে তৈরি এমন শিল্পকর্ম প্রদর্শন করা হয়েছিল। সেবার অন্য একজন শিল্পী কলাটি দেয়াল থেকে খুলে খেয়ে ফেলেন, শুরু হয় হাস্যরস। পরে ফাঁকা জায়গায় আরেকটি কলা লাগিয়ে দেওয়া হয়।
তখন থেকেই এই কলা শিল্পকর্ম নিয়ে হইচই পড়ে যায়। দর্শনার্থীরা ভিড় করে সেটির সামনে সেলফি তুলতে থাকেন। সেলফি–শিকারিদের চাপে প্রদর্শনীর স্থল থেকে পরে শিল্পকর্মটি সরিয়ে নেওয়া হয়।
কিন্তু গত ৫ বছরে এই শিল্পকর্মের তিনটি সংস্করণ ১ লাখ ২০ হাজার মার্কিন ডলার থেকে ১ লাখ ৫০ হাজার মার্কিন ডলারে বিক্রি হয়েছে। পেরোটিন গ্যালারি থেকে জানা গেছে এ তথ্য।
শিল্পকর্মটি ক্রয়ের পর এক বিবৃতিতে জাস্টিন সান বলেন, “এটি শুধু একটি শিল্পকর্ম নয়; বরং এমন একটি সাংস্কৃতিক প্রপঞ্চ যা ক্রিপ্টোকারেন্সি কমিউনিটির সঙ্গে শিল্প এবং মিমসের জগতের সেতুবন্ধন সৃষ্টি করে।”
সূত্র : বিএসএস, এএফপি, দ্য নিউইয়র্ক টাইমস।
এসএমডব্লিউ