হামাসের ভারপ্রাপ্ত প্রধান খলিল আল হায়া

ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় যুদ্ধ শেষ করলেই কেবল অবশিষ্ট জিম্মিদের মুক্তি দেবে উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী সশস্ত্র রাজনৈতিক গোষ্ঠী হামাস। গোষ্ঠীটির ভারপ্রাপ্ত প্রধান খলিল আল হায়া বুধবার এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন।

হামাস সমর্থিত সম্প্রচার সংবাদমাধ্যম আল-আকসা টেলিভিশন চ্যানেলকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে খলির আল হায়া বলেন, “যদি আগ্রাসন বন্ধ না হয়, তাহলে কেন হামাস জিম্মিদের ফেরৎ দেবে? দখলদার বাহিনী যদি যুদ্ধ শেষ না করে, তাহলে কোনো জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে না।”

গত বেশ কিছুদিন ধরে থেমে আছে গাজায় যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত চুক্তির ব্যাপারটি। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার আরও একবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে গাজায় নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি সংক্রান্ত একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু যুক্তরাষ্ট্রের ভেটোর কারণে তা বাতিল হয়ে গেছে।

গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মিদের হস্তান্তর নিয়ে ইসরায়েল এবং মধ্যস্থতাকারী তিন দেশ কাতার, মিসর ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সঙ্গে হামাসের যে প্রতিনিধি দলটি আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে, সেটির নেতৃত্ব দিচ্ছেন খলিল আল হায়া। আল আকসা টিভিকে তিনি বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি ও জিম্মিদের হস্তান্তর প্রক্রিয়া থেমে থাকার জন্য মূলত দায়ী ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর নেতৃত্বাধীন সরকার।

 “আমাদের সঙ্গে মধ্যস্থতাকারীদের যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। আমরা এই থেমে থাকা আলোচনা ফের শুরু করতে চাই। কিন্তু দখলদার বাহিনীর যদি (আলোচনায় আসার) প্রকৃত ইচ্ছা না থাকে, তাহলে তো তা অসম্ভব।”

“আর নেতানিয়াহু যে এই শান্তি আলোচনাকে একেবারেই গুরুত্ব দিচ্ছেন না, তার পক্ষে ইতোমধ্যে অসংখ্য বাস্তব প্রমাণ আমাদের সামনেই রয়েছে।”

গত মঙ্গলবার গাজা সফরে গিয়েছিলেন বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সেখানে সাংবাদিকদের তিনি বলেছেন, হামাস আর কখনও গাজা শাসন করতে পারবে না। তিনি আরও বলেছেন যে হামাসের কব্জায় এখনও যেসব জিম্মি রয়েছেন, তাদেরকে মুক্ত করতে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরায়েলি বাহিনী।

২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়ে ১ হাজার ২০০ জনকে হত্যার পাশাপাশি ২৪২ জনকে জিম্মি হিসেবে ধরে নিয়ে যায় তারা।

জিম্মিদের মুক্ত করতে ওই দিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী, যা এখনও চলছে। ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে এ পর্যন্ত গাজায় নিহত হয়েছেন প্রায় ৪৪ হাজার মানুষ এবং আহত হয়েছেন লক্ষাধিক।

২০২৩ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী এক বিরতির সময় ১০৭ জনকে মুক্তি দিয়েছিল হামাস, বিনিময়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন কারাগারে বন্দি ফিলিস্তিনিদের মধ্যে থেকে ১৫০ জনকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েলও।

তার পর থেকে এ পর্যন্ত মাত্র ৩ থেকে ৪ জন জিম্মিকে মুক্তি দিয়েছে হামাস; আর অভিযানের মাধ্যমে আরও ৩ জন জিম্মিকে মুক্ত করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। এছাড়া ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে কয়েক জন জিম্মি নিহতও হয়েছেন।

তবে এখনও শতাধিক জিম্মি হামাসের কব্জায় রয়েছে।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ