ব্রাজিলে জি২০ শীর্ষ বৈঠকের পর জারি করা ঘোষণাপত্র নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জার্মানির চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস। ঘোষণাপত্রে ইউক্রেন ও মধ্যপ্রাচ্য নিয়ে যা বলা হয়েছে, তাতে খুশি হতে পারেননি তিনি।

জার্মান এই চ্যান্সেলর বলেছেন, “রাশিয়া যে ইউক্রেন যুদ্ধের জন্য দায়ী, সেই কথাটা বলার মতো ভাষা খুঁজে পায়নি জি২০। আমার মনে হয়েছে, যা বলা হয়েছে, তা খুবই কম।”

শলৎস বলেছেন, “রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মতো ক্ষমতার অন্ধ দম্ভ নিয়ে থাকা মানুষের জন্য গত এক হাজার দিন ধরে ইউক্রেনের মানুষ যন্ত্রণার মধ্যে আছেন। তিনি সহিংসতার মাধ্যমে রাশিয়ার এলাকা বাড়িয়ে নিতে চান।”

ওলাফ শলৎস আরও বলেছেন, জি২০ গাজায় যুদ্ধবিরতির কথা বলেছে। তিনি এটা সমর্থন করেন। কিন্তু ঘোষণাপত্রে হামাস, হিজবুল্লাহ এবং ইরানের হাত থেকে নিজেকে রক্ষা করার অধিকার যে ইসরায়েলের আছে তা বলা হয়নি। এই সংঘাতের জন্য যে হামাস দায়ী, সেটাও জানানো হয়নি বলে শলৎস ক্ষুব্ধ।

শলৎস জানিয়েছেন, “দুঃখের বিষয় হলো, এনিয়ে কোনও মতৈক্য হয়নি। আমরা যদি বলতাম, ইসরায়েলের ওপর ভয়ঙ্কর ও বর্বরোচিত আক্রমণের ফলে এই সংঘাত শুরু হয়েছিল, তা হলে ভালো হতো।”

যুক্তরাষ্ট্র, ইইউ, জাপান-সহ অনেক দেশই হামাসকে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে ঘোষণা করেছে। শলৎস বলেছেন, “এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে, প্রবল ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা জি২০-কে প্রভাবিত করছে।”

এদিকে জি২০ শীর্ষ বৈঠকের সাইডলাইনে জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎসের সঙ্গে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বৈঠক হয়েছে। দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক আর্থিক ও বাণিজ্যিক বিষয় নিয়ে যেমন আলোচনা করেছেন, তেমনই কথা বলেছেন আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়েও।

তাদের আলোচনায় ইউক্রেন প্রসঙ্গও এসেছে, যেখানে চীন ও  জার্মানি একেবারে উল্টো অবস্থানে আছে। শি জিনপিংকে শলৎস বলেছেন, দুই দেশের সংস্থাগুলো যাতে সমান সুযোগ পায় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। ভবিষ্যতের জন্য এটা খুবই জরুরি।

চীনের সরকরি বার্তাসংস্থা সিনহুয়া জানিয়েছে, প্রেসিডেন্ট বলেছেন, বার্লিনের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদী ও কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তুলতে চায় বেইজিং। তিনি জানিয়েছেন, চীন ও জার্মানি দুই দেশেরই প্রচুর প্রভাব রয়েছে এবং দুইটিই অন্যতম প্রধান দেশ।

জার্মানির গাড়ি প্রস্তুতকারকরা দাবি করেছেন, চীন ও ইইউ দেশ থেকে ইলেকট্রিক গাড়ির জার্মানিতে বিক্রির ক্ষেত্রে অন্য দেশের মতোই মাসুল বসাতে হবে। না হলে, জার্মানির অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে।

শি জিনপিং বলেছেন, চীন আলোচনার মাধ্যমে ইলেকট্রিক গাড়ির বিষয়ে সমস্যার সমাধান করতে চায়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই আলোচনা শুরুর কথা জানিয়েছেন তিনি।

ইউক্রেন প্রসঙ্গে শলৎস চীনের প্রেসিডেন্টকে বলেছেন, বিশ্বজুড়ে একটাই নীতি থাকা দরকার। কেউ যেন তাদের প্রতিবেশীকে ভয় না পায়। তিনি বলেছেন, উত্তর কোরিয়ার সেনা যেভাবে রাশিয়ায় গিয়ে যুদ্ধ করছে, তাতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।

সরকারি ব্রডকাস্টার জেডিএফ-কে শলৎস আরও বলেছেন, রাশিয়াকে চীনের অস্ত্র দেওয়া জার্মানি মেনে নেবে না।

টিএম