ঘন ধোঁয়াশার মধ্যে দিল্লির রাস্তায় গাড়ি চলাচল করছে। সোমবার সকালের ছবি

শীত মৌসুম শুরুর আগেই ভয়াবহ বায়ুদূষণে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লি। প্রতিদিনই বাতাসের মানের অবনতি এবং তা ‘খুব খারাপ’ পর্যায়ে পৌঁছে যাওয়ায় এবার নয়াদিল্লিতে কঠোর বিধিনিষেধ জারি করা হয়েছে।

দিল্লির বায়ু দূষণ উদ্বেগজনক পর্যায়ে পৌঁছানোর পর আগেই বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল প্রাইমারি স্কুল। আর এবার হাইস্কুলও বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দিল্লি সরকার। ক্লাস হবে অনলাইনে। কেবল দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস অফলাইনে হবে।

অন্যদিকে কর্মক্ষেত্রেও ৫০ শতাংশ কর্মীকে বাড়ি থেকে কাজ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সোমবার (১৮ নভেম্বর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টিভিনাইন ও এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যম বলছে, তাপমাত্রার পতনের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দূষণ বাড়ছে দিল্লিতে। সোমবার সকাল ৯টায় ভারতের এই জাতীয় রাজধানী শহরটিতে বায়ুর গুণগত মান (এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স বা একিউআই) ছিল ৪৮৫। আর রোববার সন্ধ্যায় এই মান ছিল ৪৫৫।

পরিসংখ্যান বলছে, সোমবার এই মৌসুমের দূষিততম দিনের সাক্ষী হয়েছেন দিল্লির বাসিন্দারা। আর তাই দূষণ রুখতে আট দফা বিধিনিষেধ জারি করেছে দিল্লি প্রশাসন। তারপরেও অবশ্য দূষণে লাগাম টানা যাচ্ছে না।

মূলত বিগত এক সপ্তাহ ধরেই ‘ভয়াবহ’ বায়ু দূষণের শিকার দিল্লির বাসিন্দারা। দিন-দুপুরেও ঘন ধোঁয়াশায় ঢাকা থাকছে ভারতের এই রাজধানী শহর। ফলে কমেছে দৃশ্যমানতা। দেরিতে চলছে ট্রেন এবং ফ্লাইট। যাত্রীদের অতিরিক্ত সময় হাতে নিয়ে বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পরামর্শ দিচ্ছে এয়ারলাইন্সগুলো।

উদ্ভূত পরিস্থিতি সামাল দিতে ‘গ্রেডেড রেসপন্স অ্যাকশন প্ল্যান’ (গ্র্যাপ-৩) চালু করেছে দিল্লি সরকার। এর মাধ্যমে আট দফা বিধিনিষেধ কার্যকর করা হয়েছে। আর এর ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী বহনকারী ট্রাক ছাড়া অন্য ভারী যানবাহন আপাতত দিল্লিতে প্রবেশ করতে পারবে না।

এছাড়া আধুনিকতম ইঞ্জিনবিশিষ্ট গাড়ি ছাড়া অন্য ছোট গাড়ি প্রবেশের ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হচ্ছে। আপাতত পরিকাঠোমা নির্মাণের কাজও স্থগিত করতে বলা হয়েছে। স্কুলগুলোকে দশম, একাদশ এবং দ্বাদশ শ্রেণি বাদে অন্য সব শ্রেণির পঠন-পাঠন অনলাইনে করানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে সোমবার সকালে ধোঁয়াশার দেখা মিলেছে আরব সাগরের উপকূলবর্তী শহর মুম্বাইয়েও। ভারতের এই বাণিজ্যনগরীতে বায়ুর গুণগত মান ১৭৯। তবে এই ধরনের ধোঁয়াশা শেষ কবে দেখা গেছে, তা মনে করতে পারছেন না মুম্বাইবাসীরা।

সংবাদমাধ্যম বলছে, দূষণের কারণে দিল্লি বিমানবন্দরের দৃশ্যমানতা কমে দাঁড়িয়েছে ১০০ মিটারে। এর জেরে বিপর্যস্ত ফ্লাইট চলাচল। দিল্লি বিমানবন্দর থেকে প্রায় সব ফ্লাইটই আধঘণ্টা থেকে এক ঘণ্টা দেরিতে চলছে।

টিএম