ভারতে করোনার প্রথম ধাক্কায় বহু চিকিৎসক, স্বাস্থ্য কর্মী, পুলিশ মারা গিয়েছেন। তাই সামনের সারির এই যোদ্ধাদের বাঁচানোর জন্য টিকা আবিষ্কারের পর থেকেই অগ্রাধিকার ভিত্তিতে তা প্রয়োগ শুরু হয়। ফলে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রথম সারির এই যোদ্ধাদের মৃত্যুর হার অনেক কমে গিয়েছে। কিন্তু প্রথম সারির আরও এক শ্রেণির যোদ্ধাদের সেই সৌভাগ্য হয়নি। করোনাকালে প্রতিদিন রাস্তায় বেরিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করা সেই সাংবাদিকদের জন্য অনেক পরে টিকা প্রয়োগের ব্যবস্থা হয়েছে। কিন্তু টিকা নেওয়ার আগেই অনেক সাংবাদিক করোনায় প্রাণ হারিয়েছেন।
 
একটি পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের এপ্রিল মাস থেকে এক বছরে ৩০০ জনের বেশি সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে করোনায়। তাদের মধ্যে অনেক স্বনামধন্য সাংবাদিকও রয়েছেন। দিল্লির পারসেপশন স্টাডিজ নামে একটি সংস্থা এক রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে চলতি মাসের ১৬ মে পর্যন্ত ২৩৮ জন সাংবাদিক মারা গিয়েছেন। তাদের তালিকার বাইরেও অন্তত ৮২টি নাম রয়েছে যাদের মৃত্যুর কারণ এখনও নিশ্চিত করা বাকি।

পারসেপশন স্টাডিজের পরিচালক ডক্টর কোটা নীলিমাও দাবি করেছেন, ৩০০-র বেশি সাংবাদিক করোনায় মারা গিয়েছেন। এই তালিকায় সেই সব সাংবাদিককে ধরা হয়েছে যারা রাস্তায় বেরিয়ে বা অফিসে বসে কাজ করতেন এবং করোনায় মারা গিয়েছেন। এর মধ্যে রিপোর্টার, ফ্রিল্যান্সার, ফটো সাংবাদিকসহ সবাইকেই ধরা হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়েছে, তেলেঙ্গানা এবং উত্তরপ্রদেশে সবচেয়ে বেশি সাংবাদিক প্রাণ হারিয়েছেন। উত্তরপ্রদেশে গত এক বছরে ৩৭ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে। তেলাঙ্গানায় মৃত্যু হয়েছে ৩৯ জন সাংবাদিকের। এর পরেই রয়েছে দিল্লি। সেখানে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে। মহারাষ্ট্রের ২৪ জন সাংবাদিক, ওড়িষায় ২৬ জন এবং মধ্যপ্রদেশের ১৯ জন সাংবাদিকের মৃত্যু হয়েছে।
 
রিপোর্টে আরও একটি দিক উল্লেখ করা হয়েছে। সেটি হলো মারা যাওয়া সাংবাদিকদের ৩১ শতাংশ ছিলেন ৪১ থেকে ৫০ বছর বয়সী। ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সী সাংবাদিকের মৃত্যুর হার ছিল ১৫ শতাংশ এবং ৫১ থেকে ৬০ বছর বয়সী সাংবাদিকের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ১৯ শতাংশ। ২৪ শতাংশ সাংবাদিক মারা গিয়েছেন যাদের বয়স ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ছিল। আর ৭১ বছর বয়সী ছিলেন ৯ শতাংশ।

সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন

জেডএস