ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসতে চুরির অভিযোগে এক বাংলাদেশি নাগরিককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বারাসতের একটি বাড়ি থেকে নগদ অর্থ ও স্বর্ণালঙ্কার চুরির অভিযোগ তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

পশ্চিমবঙ্গের বাংলা দৈনিক আনন্দবাজারের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বারাসতে চুরির অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত বাংলাদেশির নাম মিজানুর তালুকদার। বারাসাত হাসপাতালের কাছে ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করছিলেন তিনি। গত ১১ অক্টোবর বারাসতের একটি বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় তদন্তে নেমে পুলিশ মিজানুর রহমানকে শনাক্ত করে। পরে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

আনন্দবাজার লিখেছে, কোনও বাড়িতে চুরি করতে যাওয়ার আগে সেই পরিবারের কে কখন বাড়িতে ঢোকেন এবং বের হন তা কয়েকদিন ধরে নজর রাখেন মিজানুর। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে গত দুর্গাপুজার সময় বাড়ির লোকজন বেরিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে উত্তর চব্বিশ পরগনার বারাসতের একটি বাড়িতে ঢোকেন তিনি। ওই চুরির ঘটনার প্রায় এক মাস পরে ধরা পড়েছেন মিজানুর।

সিসিটিভি ফুটেজ দেখে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে মিজানুর তালুকদার নামের ওই বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর বারাসতের ওই বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হলে কীভাবে সেখানে ঢুকে চুরি করেছেন, তার বর্ণনা দিয়েছেন মিজানুর।

গত ১১ অক্টোবর বারাসত থানা এলাকার বাসিন্দা প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়িতে চুরি হয়। প্রবীরের মেয়ের বিয়ে ছিল সেদিন। বাড়িতে নগদ টাকা ও গয়না ছিল। পুলিশ বলছে, বাংলাদেশের বাসিন্দা মিজানুরের কাছ থেকে সোনা ও নগদ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশের কর্মকর্তারা বলেছেন, পুজার আগে ভারতে যান মিজানুর। বারাসাত হাসপাতালের কাছে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া করেছিলেন তিনি। ফ্ল্যাট থেকে দিনের বেলায় বেরিয়ে বাড়ি-বাড়ি চুরি করতেন তিনি। এভাবে বারাসাত থানা এলাকার একাধিক বাড়িতে চুরির ঘটনা ঘটেছে। কারও বাড়ির দেয়াল টপকে ঘরে ঢুকেছেন। আবার কারও বাড়ির দরজার গ্রিল ভেঙে চুরি করেছেন।

তদন্তে জানা যায়, চুরির সময় এমন ভাব করতেন মিজানুর যে, প্রতিবেশীরা ভাবতেন ওই বাড়িতে হয়তো কোনও কাজ হচ্ছে। কয়েকটি বাড়ির মালিক চুরির অভিযোগ নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছিলেন।

বারাসতের বাসিন্দা প্রবীর বলেন, ‘‘আমার বাড়িতে প্রায় ৩২ হাজার টাকা নগদ ছিল। মেয়ের বিয়ের জন্য কিছু গয়না ছিল বাড়িতে। সেগুলো ফেরত পেয়েছি। তা ছাড়া একটা মঙ্গলসূত্র ছিল। সেটা ১৯৮২ সালের। তার একটা সেন্টিমেন্টাল ভ্যালু ছিল। ওটা পাইনি।’’

তিনি বলেন, সিসিটিভি ফুটেজ দেখে তারা জানতে পারেন গত ১১ অক্টোবর সপরিবারে বের হওয়ার পরই একটি গাড়ি এসে থেমেছিল বাড়ির সামনে। কিছুক্ষণ পর সেই গাড়িটি চলে যায়।

একাধিক চুরির ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ বুঝতে পারে ‘‘চোর’’ একজনই। পরে বিভিন্ন এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযুক্তকে চিহ্নিত করা হয়। পুলিশ বলছে, সোনা চুরি করার পর পরিমাণ দেখার জন্য ভাড়া বাড়িতে সোনা মাপার যন্ত্রও রেখেছিলেন মিজানুর।

এসএস