প্রাণঘাতী রোগ করোনায় এখন পর্যন্ত বিশ্বে মারা গেছেন ৩৪ লাখ ১৮ হাজার ৩৩ জন। এর মধ্যে মঙ্গলবার মারা গেছেন ১৩ হাজার ৮১১ জন।

এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় করোনায় নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৬ লাখ ৭ হাজার ১১৪ জন রোগী। মহামারি শুরুর পর থেকে বিশ্বের দেশগুলোতে করোনায় আক্রান্ত, মৃত্যু ও সেরে ওঠা বিষয়ক হালনাগাদ তথ্য প্রদানকারী ওয়েবসাইট করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটার এই তথ্য জানিয়েছে।

করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর হিসেবে গত দু’মাসেরও বেশি সময় ধরে শীর্ষে আছে ভারত। মঙ্গলবার  দেশটিতে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৬৮ হাজার ১৭৪ জন এবং মারা গেছেন ৪ হাজার ৫২৫ জন। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগী আছেন ৩২ লাখ ৩২ হাজার ১৬৫ জন।

এই তালিকায় ভারতের পরেই আছে ব্রাজিল। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম এই দেশটিতে মঙ্গলবার করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৭৪ হাজার ৩৭৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ২ হাজার ৫১৭ জনের। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ৪৮ হাজার ৪৯৭ জন।

আন্তর্জাতিক ফুটবল বিশ্বকাপে ব্রাজিলের চির প্রতিদ্বন্দ্বি দেশ আর্জেন্টিনা আছে এই তালিকায় তৃতীয় অবস্থানে। গত ২৪ ঘণ্টায় দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম বৃহৎ এই দেশটিতে মঙ্গলবার করোনায় মারা গেছেন ৭৪৪ জন, আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৪৩। দেশটিতে বর্তমানে সক্রিয় করোনা রোগী আছেন ৩ লাখ ৭ হাজার ৪১২ জন।

করোনা মহামারি শুরু হওয়ার পর থেকে এ পর্যন্ত এ রোগে আক্রান্ত ও মৃতের তালিকায় বিশ্বের দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষে আছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে ব্যাপক টিকাকরণের ফলে বর্তমনে দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর ক্ষেত্রে কিছুটা নিম্নমূখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে দেশটিতে। গত ২৪ ঘণ্টায় ৭১৪ মৃত্যু ও ২৬ হাজার ৭১৪ জন আক্রান্ত রোগী নিয়ে করোনায় দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর তালিকায় চতুর্থ অবস্থানে আছে যুক্তরাষ্ট্র।

তবে সক্রিয় করোনা রোগীর এখনও সবচেয়ে বেশি যুক্তরাষ্ট্রে। বর্তমানে সেখানে সক্রিয় করোনা রোগী আছেন ৫৯ লাখ ২৫ হাজার ৮৯ জন।

করোনাভাইরাস ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য অনুযায়ী, মহামারি শুরুর পর থেকে এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৬ কোটি ৪৮ লাখ ৭৯ হাজার ২৬৪ জন; আর এ রোগে মৃত্যু হয়েছে মোট ৩৪ লাখ ১৮ হাজার ৩৩ জনের।

অবশ্য প্রাণঘাতী ভাইরাসটির সঙ্গে লড়াই করে সুস্থ হয়ে ওঠার হারও কম নয়। করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৪ কোটি ৩৮ লাখ ৮৩৮ জন।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহান শহরে প্রথম শনাক্ত হয় প্রাণঘাতী সার্স-কোভ-২ ভাইরাস, যা বিশ্বে সাধারণভাবে পরিচিতি পায় করোনাভাইরাস নামে। শনাক্ত হওয়ার তিন মাসের মধ্যে বিশ্বজুড়ে মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়ে এই ভাইরাসটি।

যুক্তরাষ্ট্রসহ বিভিন্ন দেশ যদিও অভিযোগ করে আসছে, চীনের গবেষণাগারে এই ভাইরাসটি কৃত্রিমভাবে প্রস্তুত করা হয়েছে, তবে চীন বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, প্রাকৃতিকভাবেই আবির্ভাব ঘটেছে সার্স-কোভ-২ ভাইরাসটির।

গত বছর ফেব্রুয়ারি মাসে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা করোনাকে মহামারি হিসেবে ঘোষণা করে। ২০২০ সালের প্রথম সাত-আট মাসে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ব্যাপক আক্রান্ত ও মৃত্যুর পর ওই বছরের শেষ দিকে কিছুটা কমে এসেছিল করোনা সংক্রমণ। এর মধ্যে বিভিন্ন কোম্পানির করোনা প্রতিরোধী টিকা বাজারে এসে যাওয়ায় গণটিকাদান কর্মসূচিও শুরু করেছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ।

তবে গত মার্চ থেকে বিভিন্ন দেশে, বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে ফের ব্যাপকভাবে বাড়তে শুরু করেছে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর হার। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বর্তমানে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ পার করছে দক্ষিণ এশিয়া।

এসএমডব্লিউ