বিএসএফ থেকে বাঁচতে নদীতে লাফ, ৫ ঘণ্টা লুকিয়ে থাকার পর করুণ মৃত্যু
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে নদীর ঠান্ডা পানিতে ৫ ঘণ্টা কাটানোর পর এক মাদক চোরাকারবারি মারা গেছেন। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) তাকে কুখ্যাত আন্তঃসীমান্ত মাদক চোরাচালানকারী হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।
রোববার (১০ নভেম্বর) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
বিজ্ঞাপন
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জামিনে থাকা এক কুখ্যাত আন্তঃসীমান্ত মাদক চোরাচালানকারী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত (আইবিবি) বরাবর ইছামতি নদীর ঠান্ডা পানিতে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা কাটানোর পরে মারা গেছেন বলে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) রোববার দাবি করেছে।
বিএসএফের সাউথ বেঙ্গল ফ্রন্টিয়ারের ডিআইজি এবং মুখপাত্র এন কে পান্ডে মৃত ওই যুবককে বাবাই বড়াই হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি আরও জানান, একজন সহযোগীসহ বাবাই বড়াইকে ভোর ৪টার দিকে নদীর পানির কচুরিপানার নিচ থেকে উদ্ধার করে পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪-পরগনা জেলার আংরাইল সীমান্ত ফাঁড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
ডিআইজি পান্ডে বলেন, “বিওপি-তে তাদের কম্বল দেওয়ার পাশাপাশি গরম চা পরিবেশন করা হয়েছিল। আগুনও জ্বালানো হয়েছিল, যাতে তারা নিজেদেরকে গরম করতে পারে। কিছুক্ষণ পরে, বড়াই অস্বস্তি বোধ করতে শুরু করেন এবং তাকে নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা শুরু হয়। তবে, তিনি মারা যান। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা যাবে।”
তিনি আরও বলেন, বিএসএফের ৫ম ব্যাটালিয়নের সৈন্যরা শনিবার রাত ১১ টার দিকে চারজনকে কিছু মালামাল এবং ধারালো অস্ত্র নিয়ে সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করতে দেখে। তার ভাষায়, “বিএসএফ জওয়ানরা কাছে আসতেই চারজন তাদের আক্রমণ করে। আত্মরক্ষার জন্য এক বিএসএফ জওয়ান ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে। গুলির আওয়াজ শুনে দু’জন দুষ্কৃতী ভারতের দিকে ফিরে যায়। আর বাকি দু’জন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়ে।”
বিএসএফের এই ডিআইজি বলেন, বিএসএফের একটি কুইক রিঅ্যাকশন টিম (কিউআরটি) তাৎক্ষণিকভাবে এলাকাটি ঘিরে ফেলে এবং নদীর উভয় তীরে তল্লাশি চালায়। তিনি আরও জানান, তল্লাশি অব্যাহত থাকে এবং ভোর ৪টার দিকে বড়াই ও তার সঙ্গীকে পানিতে ভাসমান কচুরিপানার তলায় পাওয়া যায়। পরে তাদের আটক করে আংরাইল ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই বাড়ই অসুস্থ বোধ করেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন।
আরও পড়ুন
নদীর দুই পাড়ে তল্লাশি চালিয়ে পরে ৫০০ বোতল তরল মাদক উদ্ধার হয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের জনসংযোগ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, জওয়ানরা ওই যুবককে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। অসুস্থ বোধ করায় দ্রুত চিকিৎসাও দেওয়া হয়। পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চোরাচালানের অভিযোগে আগেও ধরা পড়েছিলেন বাবাই।
পুলিশ জানিয়েছে, ওই যুবকের নাম বাবাই বাড়ই (২৮)। তার বাড়ি পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁর পল্লিশ্রী এলাকায়। এদিকে ছেলের মৃত্যুর তদন্ত চেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে তার পরিবার। সবদিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে রাজ্য পুলিশ।
টিএম