আদানি গ্রুপসহ ভারতীয় বিদ্যুৎ কোম্পানিগুলোর বকেয়া পরিশোধে শেখ হাসিনা সরকারকে দুই বিলিয়ন ডলার ঋণ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছিল ভারত সরকার। তবে গণআন্দোলনে শেখ হাসিনার পতন হওয়ার পর এই পরিকল্পনা স্থগিত হয়ে যায়।

সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুকে এ তথ্য জানিয়েছে।

সূত্রটি বলেছে, “বাংলাদেশে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সাবেক সরকার ভারতীয় সরকারের সঙ্গে বিদ্যুতের বকেয়া পরিশোধে ঋণ পাওয়ার জন্য আলোচনা করছিল। বিশেষ করে আদানির বকেয়া পরিশোধের কথা বলা হয়েছিল। এছাড়া বিষয়টি সহজ করতে এই ঋণে ২ শতাংশ সরকারি ভর্তুকি দেওয়ারও কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু হাসিনার পতনের পর আলোচনা থমকে যায়।”

গত কয়েকমাস ধরেই বিদ্যুৎসহ অন্যান্য জ্বালানির অর্থ পরিশোধে হিমশিম খাচ্ছিল বাংলাদেশ। কারণ সরকারের হাতে পর্যাপ্ত ডলার ছিল না। এছাড়া রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে সবকিছুর দাম বেড়ে যাওয়ার পর পরিস্থিতি আরও ঘোলাটে হয়।

দীর্ঘদিন ধরে বকেয়া জমে যাওয়ায় আদানি গ্রুপ তাদের গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ ৬০ শতাংশে কমিয়ে দিয়েছে। কারণ কোম্পানিটি বাংলাদেশের কাছে এখনো প্রায় ৮০০ মিলিয়ন ডলার পাবে।

গত সপ্তাহে শোনা যায় বকেয়া পরিশোধে বাংলাদেশকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে আদানি। তবে পরবর্তীতে তারা জানায় এ ধরনের কোনো ডেডলাইন দেওয়া হয়নি।

আদানি ছাড়াও চারটি ভারতীয় কোম্পানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে। এই কোম্পানিগুলোও অনেক অর্থ পাওনা হয়ে গেছে। তবে বাকিগুলোর তুলনায় আদানির বকেয়া অনেক বেশি।

ভারতে থেকে যদি শেখ হাসিনা এই ঋণ নিতেন তাহলে বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য ভালো হতো দাবি করে সূত্রটি বলেছে, “ভারত থেকে ২ বিলিয়ন ডলার ঋণ বাংলাদেশের বকেয়া পরিশোধে খুবই সহায়তা করত। তবে এক দিক দিয়ে বিষয়টি ভারত সরকারের জন্য ভালো হয়েছে। কারণ শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ায় এই অর্থ পাওয়া আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যেত।”

শেখ হাসিনা ভারত থেকে ঋণ এনে ভারতীয় কোম্পানির বকেয়া পরিশোধের চেষ্টা চালালেও; ড. ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার এ ধরনের কোনো উদ্যোগ বা এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি বলে জানিয়েছে সূত্রটি।

বাংলাদেশের মোট বিদ্যুৎ চাহিদার ১০ শতাংশ আসে ভারত থেকে। এক শিল্প বিশেষজ্ঞ সংবাদমাধ্যমটিকে বলেছেন, বাংলাদেশ হয়ত ভারতের সঙ্গে থাকা বিদ্যুৎ চুক্তিগুলো ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে (কমে পাওয়ার জন্য) পর্যালোচনা করতে চায়। কিন্তু তাদের বিদ্যুতের জন্য ভারত ছাড়া অন্য কোনো বিকল্প নেই।

সূত্র: দ্য হিন্দু

এমটিআই