ইরানের অভিজাত বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) নির্দেশে নির্বাচিত-মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যাচেষ্টার পরিকল্পনা করায় যুক্তরাষ্ট্রে এক ইরানি নাগরিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়েছে। শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগের বরাত দিয়ে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

মার্কিন বিচার বিভাগের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফরহাদ শাকেরি নামের ওই ইরানি নাগরিক আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে জানিয়েছেন, গত ৭ অক্টোবর ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার পরিকল্পনা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল তাকে।

তবে আইআরজিসির নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে চাননি বলে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাকে জানিয়েছেন শাকেরি।

এই বিষয়ে ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইসমাইল বাঘাই এক বিবৃতিতে বলেছেন, এটি আমেরিকা ও ইরানের সংকটগুলোকে জটিল করার একটি বিদ্বেষমূলক চক্রান্ত; যার সঙ্গে ইসরায়েল এবং দেশের বাইরের ইরান-বিরোধীরা জড়িত।

যুক্তরাষ্ট্রের বিচার বিভাগ ৫১ বছর বয়সী শাকেরিকে তেহরানে বসবাসকারী বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর ‘‘সম্পদ’’ হিসাবে বর্ণনা করেছে। বিবৃতিতে বিচার বিভাগ বলছে, শাকেরি ছোটবেলায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছিলেন। পরে ২০০৮ সালের দিকে ডাকাতির এক মামলায় দোষী সাব্যস্ত হওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্র থেকে নির্বাসিত করা হয় তাকে। 

মার্কিন প্রসিকিউটররা বলেছেন, ইরানি নাগরিক শাকেরি বর্তমানে পলাতক রয়েছেন। তিনি ইরানে রয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

কার্লাইল রিভেরা এবং জোনাথন লোডহোল্ট নামের নিউইয়র্কের দুই বাসিন্দার সাথে কারাগারে সাক্ষাৎ করেছিলেন শাকেরি। এই দুই মার্কিনির বিরুদ্ধেও নিউইয়র্কে ইরানি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিককে হত্যার ষড়যন্ত্রে সহায়তা করার অভিযোগ আনা হয়েছে। ইরানি বংশোদ্ভূত ওই মার্কিন নাগরিক ইরানের ক্ষমতাসীন সরকারের কট্টর সমালোচক হিসেবে পরিচিত।

তবে এই ব্যক্তির পরিচয় প্রকাশ করেননি মার্কিন প্রসিকিউটররা। তবে যাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল, তার নাম মেসিহ আলী নেজাদ বলে ধারণা করা হচ্ছে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের বসবাসরত ইরানি-বংশোদ্ভূত এই মার্কিন নাগরিক পেশায় সাংবাদিক এবং নারীদের ইরানে মাথা ঢেকে রাখার আইনের কট্টর সমালোচক তিনি।

এর আগে, ২০২১  সালে তাকে অপহরণের ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত সন্দেহে চার ইরানিকে অভিযুক্ত করা হয়। এছাড়া পরের বছর তার বাড়ির সামনে থেকে রাইফেল-সহ এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

বিচারিক কার্যক্রম শেষ না হওয়া পর্যন্ত রিভেরা এবং লোডহোল্টকে আটক রাখার আদেশ দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের আদালত। তবে তাদের আইনজীবীরা মন্তব্যের অনুরোধে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

সূত্র: এএফপি।

এসএস