যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে আবারও বিজয়ী হয়েছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর এরপরই বিশ্বনেতাদের অভিনন্দনের জোয়ারে ভেসেছেন তিনি। অভিনন্দন জানাতে বাদ ছিলেন কেবল রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

এবার তিনিও ট্রাম্পকে জানালেন অভিনন্দন। একইসঙ্গে ট্রাম্পের সাহসিকতার প্রশংসাও করলেন পুতিন। রুশ এই প্রেসিডেন্ট বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনায় বসতে প্রস্তুত রাশিয়া।

শুক্রবার (৮ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন বৃহস্পতিবার মার্কিন নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। একইসঙ্গে বন্দুকধারী তাকে হত্যা করার চেষ্টা করার সময়ও সাহস দেখানোর জন্য ট্রাম্পের প্রশংসাও করেছেন তিনি।

পুতিন বলেছেন, মস্কো যুক্তরাষ্ট্রের ৪৭তম প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়া এই নেতার সাথে সংলাপের জন্য প্রস্তুত।

ট্রাম্পের জয়ের পর নিজের প্রথম প্রকাশ্য মন্তব্যে পুতিন আরও বলেছেন, গত জুলাই মাসে পেনসিলভেনিয়ায় প্রচার সমাবেশে বক্তৃতা করার সময় হত্যা চেষ্টার শিকার হওয়ার সময় একজন সত্যিকারের মানুষের মতো আচরণ করেছিলেন ট্রাম্প।

সোচির রাশিয়ান ব্ল্যাক সি রিসর্টে ভালদাই ডিসকাশন ক্লাবে প্রেসিডেন্ট পুতিন বলেন, “আমার মতে, তিনি খুব সঠিক উপায়ে, সাহসিকতার সাথে একজন সত্যিকারের মানুষের মতো আচরণ করেছিলেন। নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় তাকে অভিনন্দন জানানোর এই সুযোগটি আমি গ্রহণ করছি।”

পুতিন আরও বলেন, নির্বাচনী প্রচারণার সময় ট্রাম্প ইউক্রেন এবং রাশিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক স্থিতিশীল করার বিষয়ে যে মন্তব্য করেছিলেন সে বিষয়টি মনোযোগের দাবি রাখে। রুশ প্রেসিডেন্টের ভাষায়, “রাশিয়ার সাথে সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের ইচ্ছা সম্পর্কে যা বলা হয়েছিল এবং ইউক্রেনীয় সংকটের অবসান ঘটাতে (যা বলা হয়েছিল), আমার মতে এটি অন্তত মনোযোগের দাবি রাখে।”

মূলত টানা আড়াই বছর ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। আর যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলোর সহায়তায় রশিয়ার বিরুদ্ধে পাল্টা হামলা করছে কিয়েভ। রাশিয়ার সাথে এই যুদ্ধে ইউক্রেনকে সহায়তা করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার ব্যয়ের সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প।

নির্বাচনের প্রচারণা চালানোর সময় ট্রাম্প আলোচনার ও চুক্তির মাধ্যমে “২৪ ঘণ্টার মধ্যে” এই সংঘাত শেষ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। অর্থাৎ তিনি বলেছিলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইউক্রেনে শান্তি আনতে পারবেন।

তবে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের ভূখণ্ডে সবচেয়ে মারাত্মক এই যুদ্ধের অবসান তিনি ঠিক কীভাবে ঘটাবেন সে সম্পর্কে বিবরণ খুব কমই দিয়েছেন।

অবশ্য উভয় পক্ষেরই হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত বলে মনে করার কথাও তিনি বলেননি। তবে ডেমোক্র্যাটরা বলছেন, এই পদক্ষেপ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে উৎসাহিত করবে।

যদিও ৭২ বছর বয়সী রুশ প্রেসিডেস্ট বলেছেন: “আমি জানি না এখন কী ঘটতে যাচ্ছে। আমার কোনও ধারণা নেই।”

ট্রাম্প যদি বৈঠকের জন্য আগ্রহী হন তাহলে কী করবেন এমন প্রশ্নের জবাবে পুতিন বলেন, ট্রাম্প প্রশাসন চাইলে তিনি যোগাযোগ পুনরায় শুরু করতে প্রস্তুত এবং ট্রাম্পের সাথে আলোচনার জন্য প্রস্তুত।

টিএম