ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের রাজধানী শ্রীনগরের একটি জনাকীর্ণ মার্কেটে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীরা। রোববারের এই হামলায় অন্তত এক ডজন মানুষ আহত হয়েছেন বলে দেশটির পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, হামলাকারীদের ছোড়া গ্রেনেড লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়েছে। এতে কমপক্ষে ১ ডজন মানুষ আহত হয়েছেন। গণমাধ্যমের সাথে কথা বলার অনুমতি না থাকায় নাম প্রকাশে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন তিনি। 

তবে এই হামলার সাথে কোন গোষ্ঠী জড়িত সেই বিষয়ে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে কোনও তথ্য জানায়নি আইনশৃঙ্খলাবাহিনী।

পুলিশের কর্মকর্তা বলেছেন, আহতদের উদ্ধারের পর স্থানীয় একটি হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তাদের অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। গ্রেনেড বিস্ফোরণের কারণে মার্কেটে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় মার্কেটের দোকান বন্ধ করে দেন ব্যবসায়ীরা।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যদের অভিযানে কাশ্মিরের সশস্ত্র গোষ্ঠী লস্কর-ই-তৈয়বার (এলইটি) শীর্ষ এক কমান্ডার ও দুই সদস্য নিহত হওয়ার একদিন পর মার্কেটে ওই হামলার ঘটনা ঘটেছে।

ভারত এবং পাকিস্তান পৃথক দুই কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ করলেও উভয় অংশকে নিজেদের বলে দাবি করে দেশ দু’টি। ভারত-অধিকৃত কাশ্মিরের বাসিন্দারা কয়েক যুগ ধরে নয়াদিল্লির শাসনের বিরোধিতা করে স্বাধীনতার দাবিতে সশস্ত্র আন্দোলন করে আসছেন।

১৯৪৭ সালে ভারত-পাকিস্তান ভাগ হয়ে যাওয়ার পর এ দুই প্রতিবেশি দেশ ১৯৪৮, ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালে তিনবার পুর্ণমাত্রার যুদ্ধে জড়িয়েছে। এরমধ্যে কেবল কাশ্মির ঘিরেই দুই দেশের মাঝে যুদ্ধ হয়েছে দু’বার। ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো স্বাধীনতা অথবা প্রতিবেশি পাকিস্তানের সঙ্গে মিলিত হওয়ার দাবিতে সেখানে দশকের পর দশক ধরে ভারতীয় শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করছে।

কয়েকটি মানবাধিকার সংস্থার মতে, ১৯৮৯ সালে নয়াদিল্লির শাসনের বিরোধিতায় শুরু হওয়া সশস্ত্র বিদ্রোহে এখন পর্যন্ত এই অঞ্চলে হাজার হাজার মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে।

তবে হিমালয়ের কোল ঘেঁষে থাকা এই অঞ্চলটিতে নতুন করে উত্তেজনা শুরু হয় ২০১৯ সালে। ওই সময় ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নেতৃত্বাধীন সরকার কাশ্মিরের বিশেষ স্বায়ত্তশাসন সংক্রান্ত ভারতীয় সংবিধানের বিশেষ অনুচ্ছেদ বাতিল করে দেওয়ার পর নতুন করে সংঘাত শুরু হয়। মোদি সরকারের এই পদক্ষেপ পাকিস্তানকেও ক্ষুব্ধ করে তোলে।

সূত্র: রয়টার্স, আলজাজিরা।

এসএস