ভারতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা থেকে বাদ দেওয়া হলো প্লাজমা থেরাপি। এতদিন কোভিড-১৯ আক্রান্তদের চিকিৎসায় হাসপাতালগুলোতে এই পদ্ধতির মাধ্যমে চিকিৎসা হতো। কিন্তু জাতীয় কোভিড টাস্ক ফোর্স জানিয়েছে এই পদ্ধতি ছিল পরীক্ষামূলক। তাছাড়া এই পদ্ধতি রোগের সংক্রমণ কমাতে কার্যকরী নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। তাই চিকিৎসা থেকে এই পদ্ধতি বাদ দেওয়া হলো।

গত সপ্তাহে এই নিয়ে টাস্ক ফোর্সের সদস্যদের মধ্যে বৈঠক হয়। বৈঠকে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, বিজ্ঞানী ও শীর্ষ চিকিৎসকরা অংশ নিয়েছিলেন। তারা চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে প্লাজমা থেরাপিকে বাদ দেওয়ার পক্ষে মত দেন। 

এর আগে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল যে, প্লাজমা থেরাপি পদ্ধতি স্বল্প উপসর্গযুক্ত রোগীর ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যেতে পারে। অথবা উপসর্গ দেখা দেওয়ার সাত দিনের মধ্যে মাঝারি রোগীদের জন্যও ব্যবহার করা যেতে পারে। কিন্তু একাধিক বিজ্ঞানী প্রধান বৈজ্ঞানিক উপদেষ্টা কে বিজয় রাঘবনকে একটি চিঠি দেন। সেখানে বলা ছিল, দেশে প্লাজমা থেরাপির ব্যবহার অযৌক্তিক এবং অবৈজ্ঞানিকভাবে হচ্ছে। 

চিঠিতে লেখা ছিল, ক্লিনিকাল, পাবলিক হেলথ প্রফেশনাল এবং বিজ্ঞানী হিসাবে আমরা আপনাকে লিখছি যে দেশের কোভিডের চিকিৎসার জন্য প্লাজমার অযৌক্তিক ও অবৈজ্ঞানিক ব্যবহার হচ্ছে। সরকারি সংস্থাগুলোর জারি করা নির্দেশিকার জন্য এর এমন ব্যবহার হচ্ছে। আমরা এই সমস্যাটি সমাধানের জন্য অনুরোধ করছি। আপনার হস্তক্ষেপ করোনা রোগীদের, তাদের পরিবার, তাদের চিকিৎসকদের হয়রানি প্রতিরোধ করতে পারে।
 
গত শনিবার এই বিষয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ডাকা হয়। সেখানে জানানো হয় যে, করোনার চিকিৎসায় প্লাজমা দান বা থেরাপি খুব একটা ফলপ্রসূ হচ্ছে না। ভারতে করোনা মহামারি শুরুর প্রথম পর্যায়ে প্রাণঘাতী চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি প্রথম অস্ত্র হলেও প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে কোভিডের প্রকোপ কমাতে বা রোগীকে বাঁচাতে খুব একটা কার্যকর হচ্ছে না প্লাজমা থেরাপি। শুধু তাই নয়, বেশ কিছু ক্ষেত্রে এর যথেচ্ছ ব্যবহার সমস্যা বাড়াচ্ছে। সেই কারণেই প্রাথমিকভাবে গতবছর যে প্লাজমা থেরাপির কথা ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চের (আইসিএমআর) গাইডলাইনে উল্লেখ করা হয়েছিল, তা আসছে সময়ে পুরোপুরি বাতিল হয়ে যেতে পারে।

সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, ভারতে গত ২৪ ঘণ্টায় ২ লাখ ৮১ হাজার ৩৮৬ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন, এ সময়ে মারা গেছেন ৪ হাজার ১০৬ জন।

সূত্র: কলকাতা২৪

জেডএস