আন্তমহামদেশীয় ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের (আইসিবিএম) পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণকে শত্রুদের বিরুদ্ধে ‘উপযুক্ত সামরিক পদক্ষেপ’ বলে উল্লেখ করেছেন উত্তর কোরিয়ার সর্বোচ্চ নেতা কিম জং উন। আজ বৃহস্পতিবার সকালে নিজেদের পূর্ব উপকূলে সমুদ্রের দিকে এই পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ চালিয়েছে পিয়ংইয়ং।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ এক প্রতিবেদনে সদ্য পরীক্ষা করা এই আইসিবিএমকে “বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী কৌশলগত অস্ত্র” বলে উল্লেখ করা হয়েছে। সিউল সতর্ক করেছিল, ইউক্রেনে যুদ্ধে রাশিয়াকে সাহায্য করার জন্য পিয়ংইয়ং মস্কোর কাছ থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি পেতে পারে।

কেসিএনএকে উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন বলেছেন, যেসব শত্রু তার দেশের নিরাপত্তাকে হুমকি দিয়ে চলেছে তাদের জন্য এই পরীক্ষা একটি হুঁশিয়ারি সংকেত।

কিম বলেছেন, “এই পরীক্ষা একটি উপযুক্ত সামরিক পদক্ষেপ। আমরা আমাদের প্রতিপক্ষকে হুঁশিয়ারি দিতে চাই, যারা আঞ্চলিক পরিস্থিতিকে ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ করেছে এবং সম্প্রতি আমাদের প্রজাতন্ত্রের নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে।”

এই শক্তি প্রদর্শনের ঘটনা এমন একটা সময় ঘটল যখন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্যরা বলছে যে, উত্তর কোরিয়া রাশিয়াতে ১১ হাজার সৈন্য মোতায়েন করেছে; এ নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে শোরগোল পড়েছে এবং উদ্বেগ বৃদ্ধি পেয়েছে।

উত্তর কোরিয়ার এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষার নিন্দা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান ও যুক্তরাষ্ট্র।

একদিন আগে দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক গোয়েন্দা বিভাগকে উদ্ধৃত করে সিউল জানিয়েছিল, মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ে উত্তর কোরিয়া পরীক্ষামূলকভাবে আইসিবিএম উৎক্ষেপণ বা সপ্তম পারমাণবিক পরীক্ষা পরিচালনা করতে পারে। তাদের ক্রমবর্ধমান সামরিক শক্তির দিকে মনোযোগ আকর্ষণ করাই এ পরীক্ষার লক্ষ্য।

দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্র পরিচালিত কোরিয়া ইন্সটিটিউট ফর ডিফেন্স অ্যানালিসিসে উত্তর কোরিয়ার সামরিক ব্যবস্থা বিষয়ক গবেষণার প্রধান শিন সিউং-কি ভয়েস অব আমেরিকাকে বলেন, “সম্ভবত রাশিয়ার সাহায্য নিয়ে বিদ্যমান আইসিবিএমের উন্নত সংস্করণের সামর্থ্য কতটা বৃদ্ধি পেয়েছে,  তা পরীক্ষা করতেই এই উৎক্ষেপণ।”

শিন বলেছেন, রাশিয়ার সঙ্গে যুক্ত থাকায় উত্তর কোরিয়ার উপর যেভাবে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে তার পাল্টা জবাবও হতে পারে এই পরীক্ষা।

তিনি আরও বলেন, “তারা কোনও চাপের কাছে নতি স্বীকার করবে না; সেয়ানে সেয়ানে প্রত্যুত্তর দেবে—এটা দেখানোই তাদের অভিপ্রায় হতে পারে। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের উপর কিছুটা প্রভাব ফেলার ইচ্ছাও থাকতে পারে।”

সূত্র : ভয়েস অব আমেরিকা

এসএমডব্লিউ