গাজার উত্তরাঞ্চলে কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে ১০০ সন্দেহভাজন হামাস যোদ্ধাকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলি সেনারা। সোমবার এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং হামাসের হাইকমান্ড অবশ্য জানিয়েছে যে, গ্রেপ্তারদের কেউই হামাস যোদ্ধা নয় এবং কামাল আদওয়ান হাসপাতালে হামাসের কোনো যোদ্ধা চিকিৎসাধীন ছিল।

সোমবারের বিবৃতিতে আইডিএফ বলেছে, “শনিবার উত্তর গাজার কামাল আদওয়ান হাসপাতালে অভিযান চালিয়ে প্রায় ১০০ সন্ত্রাসীকে গ্রেপ্তার করেছে ইসরায়েলের সেনাবাহিনী। হাসপাতাল চত্বর থেকে বেসামরিকদের সরানোর সময় কয়েক জন পালানোর চেষ্টা করেছিল, তাদেরকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া হাসপাতালের ভেতর থেকে অস্ত্রশস্ত্র, সন্ত্রাস সংক্রান্ত তহবিল এবং গোয়েন্দা নথিও জব্দ করা হয়েছে।”   

অভিযানে অংশ নেওয়া এক সেনা কর্মকর্তা রোববার এক অনলাইন ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “কয়েক জন সন্ত্রাসী নিজেদেরকে হাসপাতালের স্টাফ বলে পরিচয় দিচ্ছিল। এ কারণে অভিযানের সময় হাসপাতালের সব স্টাফকেও তল্লাশি করা হয়েছে।”

ইসরায়েলি সেনাদের অভিযানের পর কামাল আদওয়ান হাসপাতালের কিছু ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করেছে গাজার হামাস নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। সেসব ভিডিওতে দেখা গেছে, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে ওই হাসপাতাল ও আশপাশের ভবনগুলোর বেশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

কামাল আদওয়ান হাসপাতালে কর্মরত মায়েসুন এলিয়ান নামের একজন নার্স রয়টার্সকে জানিয়েছেন, গ্রেপ্তারদের নগ্ন করে ধরে নিয়ে গেছে ইসরায়েলি সেনারা। তিনি বলেন, “যাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছে, তারা সবাই হাসপাতাল চত্বরে আশ্রিত অবস্থায় ছিল। তারা (ইসরায়েলি সেনাবাহিনী) হাসপাতাল চত্বরে ঢোকার পর প্রথমে নারী ও পুরুষদের পাশাপাশি পৃথক দু’টি সারিতে দাঁড় করিয়েছে, তারপর সবার সামনে সারিতে দাঁড়ানো প্রত্যেক পুরুষকে নগ্ন করেছে। সেই অবস্থাতেই তাদের গ্রেপ্তার গাড়িতে তোলা হয়েছে।”

তবে অনলাইন ব্রিফিংয়ে বক্তব্য দেওয়া ওই ইসরায়েলি সেনা কর্মকর্তা দাবি করেছেন, ইসরায়েলি বাহিনীর অভিযানে হাসপাতালের সীমিত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। হাসপাতালে তল্লাশি চালানোর সময় সেখানকার স্টাফ এবং আশ্রিত পুরুষদের নগ্ন করার বিষয়টি স্বীকার করে ওই কর্মকর্তা বলেছেন, “তল্লাশি চালানোর সময় তাদের নগ্ন করা হয়েছিল। তবে পরে তাদেরকে কাপড় ফেরত দেওয়া হয়েছে।”

ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হাসপাতালের জেনারেটর এবং অক্সিজেন স্টেশন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন ২ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

সূত্র : রয়টার্স

এসএমডব্লিউ